নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর থানার পশ্চিম চরজুবলী গ্রামে সুব্রত চন্দ্র দাসের (৪৭) মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন ও হত্যা মামলার মূল আসামি নূর মোহাম্মদকে (৫৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দুর্ঘটনায় দায়ী নূর মোহাম্মদের মোটরসাইকেলটিও জব্দ করা হয়েছে।
১৩ অক্টোবর দুপুরে ওই এলাকায় সড়কের পাশ থেকে সুব্রতের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার হয়। নিহত সুব্রত উপজেলার চর আমানউল্যাহ ইউনিয়নের চর বজলুল করিম গ্রামের চিরু রঞ্জন দাশের ছেলে।
পুলিশ বলছে, কুপিয়ে হত্যা নয়, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তার। দুর্ঘটনার পর কোনো যাচাই-বাছাই বা প্রমাণ ছাড়াই তার মৃত্যুর ঘটনাটিকে ‘প্রকাশ্য দিবালোকে জনসম্মুখে কুপিয়ে হত্যা’ হিসেবে প্রচার করা হয়, যা বিভ্রান্তিকর ও অনভিপ্রেত।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চরজব্বার থানায় হত্যা মামলা হওয়ার পর পুলিশের একাধিক টিম অভিযানে নামে। প্রাথমিক তদন্ত ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দেয়া তথ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মামলার মূল আসামি চরজুবলী ইউনিয়নের নূর মোহাম্মদকে শনাক্ত করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে জেলার সুধারাম উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের উত্তর ওয়াপদা বাজার থেকে নূর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে নূর মোহাম্মদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পূর্ব শুল্ল্যুকিয়ার জসিম ড্রাইভারের ঘর থেকে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়।
পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি নূর মোহাম্মদ স্বীকার করেন, ঘটনার সময় নিজের মোটরসাইকেলযোগে ভাগনে ফয়সালকে (১০) সঙ্গে নিয়ে গাছ কাটার শ্রমিকদের খাবার দিতে যাচ্ছিলেন তিনি। অন্যদিকে ভিকটিম সুব্রত নিজ মোটরসাইকেলযোগে তার স্ত্রী রিক্তা রানী দাসকে আনতে ভূইয়ার হাটে যাচ্ছিলেন। পথে চরজুবলী গ্রামের পালোয়ান বাড়ির সামনে আট কপালিয়া-পরিষ্কার বাজার সড়কে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ওভারটেকের সময় সামনে থেকে আসা নূর মোহাম্মদের দ্রুতগামী মোটরসাইকেল দেখে হঠাৎ ব্রেক করে সড়কে পড়ে যান সুব্রত। এরপর দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা সুব্রতের ওপর দিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা নূর মোহাম্মদের মোটরসাইকেলটি চলে যায়। এতে নূর মোহাম্মদের মোটরসাইকেলের বাম্পার ও স্ট্যান্ডে গলা কেটে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ আরও জানায়, নিহত সুব্রতের স্ত্রী রিক্তা দাশ চর জব্বার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে চাকরি করেন। সুব্রত প্রতিদিন স্ত্রীকে গ্রামের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে সকালে কর্মস্থলে পৌঁছে দিতেন, আবার দুপুরে গিয়ে নিয়ে আসতেন।
তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশের কাছে ঘটনার একই রকম বিবরণ দিয়েছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
—জা.অর্থনীতি/আরএস/ এআর






Add Comment