সাত ঘণ্টা পরেও জ্বলছে কার্গো ভিলেজ, আগুন নেভাতে প্রাণান্তকর চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লাগা আগুন সাত ঘণ্টায়ও নেভেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের সঙ্গে কাজ করছে বিমান বাহিনীটির দুটি ফায়ার ইউনিট, সিভিল এ্যাভিয়েশনসহ সেনাবাহিনী ও নৌ-বাহিনীও। সহায়তায় রয়েছে দুই প্লাটুন বিজিবিও।

বিমানবন্দরটি সব ধরনের উড়োজাহাজ ওঠা-নামা সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ঢাকামুখী সব ধরনের উড়োজাহাজ চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়াও সিলেটের ওসমানী ও কোলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করছে। রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে আটটি, সিলেটে একটি ও কোলকাতায় নেমেছে অন্য একটি ফ্লাইট।

এছাড়া ঢাকামুখী একাধিক আন্তর্জাতিক ফ্লাইটকে বিকল্প রুটে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা কয়েকটি ফ্লাইটও ট্যাক্সিওয়েতে আটকে রয়েছে। ঢাকাগামী ও ঢাকামুখী আরও কয়েকটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সময়সূচিতেও প্রভাব পড়েছে।

অবশ্য কার্গো ভিলেজের আগুন নিভিয়ে যতো দ্রুত সম্ভব বিমানবন্দর চালুর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যতো দ্রুত পারি, বিমানবন্দর (এয়ারপোর্ট) চালু করব। আমরা চেষ্টা করছি যে যতো দ্রুত পারি, আজকে রাতের মধ্যে ফ্লাইট ওপেন করব।’

এর আগে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এরপর থেকে একে একে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের ফায়ার ফাইটারেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সাত ঘণ্টাা ধরে আগুন নেভানোর প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি কাজ করছে বিমান বাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিটও। সিভিল এ্যাভিয়েশনসহ সেনাবাহিনী ও নৌ-বাহিনীও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে যোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সহায়তা করছে দুই প্লাটুন বিজিবিও।

বিমান বাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা বুশরা ইসলাম বলেন, ‘৮ নম্বর গেটের কার্গো ভিলেজের পাশের একটি অংশে লাগা আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। এ অংশে আমদানি করা পণ্য মজুদ রাখা হয়। সাত ঘণ্টায়ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আমরা কাছে যেতে পারছি না। বিমান ও অন্য এয়ারলাইন্সের সব ফ্লাইটকে চট্টগ্রাম, সিলেট এমনকি কোলকাতা বিমানবন্দরেও ল্যান্ড করানো হচ্ছে’।

বিদেশ থেকে আমদানি করা সব পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে বুশরা ইসলাম জানান, স্কাই এয়ারের একটি উড়োজাহাজ টেনে সরানোরও চেষ্টা চলছে। সেটি ঝুকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোলরুমের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কিংবা হতাহতের কোনো খবরও পাওয়া যায়নি। অন্য বাহিনীগুলোকে নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে আমাদের ৩৭টি ইউনিট’।

বিমান বাহিনী সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের আমদানি কারগো এলাকায় আগুন লাগার পর পরই নজরে আসে তাদেরও। সঙ্গে সঙ্গে ঢাকায় অবস্থিত বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীর উত্তম এ কে খন্দকার এবং বাশার থেকে বিমান বাহিনীর অগ্নিনির্বাপণে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল এ্যাভিয়েশনের পাশাপাশি বিমান বাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিটও অগ্নিনির্বাপণে সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস, বিমান বাহিনীসহ বিমানবন্দরে দায়িত্বরতরা কাজ করছেন।

—জা.অর্থনীতি/ এআর

 

Add Comment

Click here to post a comment

space for add

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১