নিজস্ব প্রতিবেদক: মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতাসহ সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত ‘কালো পতাকা মিছিল’ শেষে করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এদিকে রোববার (১৯ অক্টোবর) পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা অভিমুখে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে মিছিলটি বের হয়। এরপর থেকে তারা হাইকোর্টের সামনে কদম ফোয়ারা সংলগ্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এতে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নিয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।
অন্যদিকে আন্দোলনকারী শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী শহীদ মিনারে ‘আমরণ অনশন’ চালিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এ কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা। এর আগে রোববারের (১২ অক্টোবর) ‘পুলিশি হামলার’ প্রতিবাদে সোমবার (১৩ অক্টোবর) থেকে সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতিও পালন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত যুগপৎভাবে সব কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন জোটের সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন আজিজী। তিনি বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরে যাব না’।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ নির্ধারণের দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে ১২ অক্টোবর থেকে আন্দোলন চালাচ্ছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার ((১৬ অক্টোবর) সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিও যুক্ত করেছেন তারা।
তবে, জোটের প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দাবির বিষয়ে কিছুটা নমনীয়তা দেখান। তারা বলেন, এ বছর ১০ শতাংশ হারে এবং আগামী অর্থবছরে আরও ১০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর নিশ্চয়তা দিতে হবে।
তবে বর্তমানে বাজেট বরাদ্দ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর্যায়ে থাকা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পাঠানোর কথা উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার তাদের জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে পাঁচ শতাংশ (বাড়ি ভাড়া) তারা দিতে পারবে এবং সেটি ন্যূনতম দুই হাজার টাকা থাকবে। এখন যেখানে টাকা নেই, সেখানে এর থেকে বেশি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তবে, সরকারের এ প্রস্তাব প্রত্যাখান করে আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচি দেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এতে যোগ দেন তাদের পরিবারের সদস্যরাও।
৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা দেওয়া হলে তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেন শিক্ষকরা। পরদিন ৬ অক্টোবর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুসারে বেতন ও মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আগে এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা করা হয়েছে। অন্যদিকে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।
—জা.অর্থনীতি/ এআর
