ঘোষণা সোডা অ্যাশ: দুই কোটি টাকার তিন কন্টেইনার ঘনচিনি আটক

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সোডা অ্যাশ লাইট। কিন্তু আমদানি হয়েছে সোডিয়াম সাইক্লামেন্ট, যা ঘনচিনি হিসেবে পরিচিত। তাও আবার আমদানি নিষিদ্ধ তিন কন্টেইনার আমদানি হয়েছে। স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বা বিপজ্জনক প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের এই তিন কন্টেইনার ঘনচিনি আটক করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। উপ কমিশনার এইচ এম কবির এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, সোডিয়াম সাইক্লামেট হলো একটি কৃত্রিম মিষ্টি, যা চিনির চেয়ে ৩০ থেকে ৫০ গুণ বেশি মিষ্টি। সোডিয়াম সাইক্লামেট বাংলাদেশে ‘ঘনচিনি’ নামে পরিচিত। এটি একটি সাদা, স্ফটিকাকার যৌগ, যা খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। তবে এটি অনেক দেশে বিষাক্ত বা বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশেও এটি আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য হিসেবে বিবেচিত।

এইচ এম কবির জানিয়েছেন, ঢাকার মতিঝিলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এইচ পি ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের ১৬ আগস্ট চীন থেকে তিন কন্টেইনার সোডিয়াম সাইক্লামেট আমদানি করে। ঘোষণা দেওয়া হয় সোডা অ্যাশ লাইট। চালানটি খালাসের জন্য চট্টগ্রামের সিটি গেইট উত্তর কাট্টলী গোল্ডেন কন্টেইনার লিমিটেড নামে কন্টেইনার টার্মিনালে আনা হয়। তবে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি), কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস চালানটির খালাস স্থগিত করে। পরে ১৬ সেপ্টেম্বর চালানটির কায়িক পরীক্ষা করা হয়। তবে সন্দেহ হওয়ায় চালানটিতে আসা পণ্যের নমুনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোপ্রযুক্তি সেন্টার, খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব এবং চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ল্যাবে রাসায়িনক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তিনটি ল্যাব হতে রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে সেই পণ্যকে সোডিয়াম সাইক্লামেট বা ঘনচিনি হিসেবে নিশ্চিত করা হয়েছে। নিশ্চিত হওয়ার পর কন্টেইনারে ৬০ হাজার ৪৮০ কেজি ঘনচিনি আটক করা হয়েছে। পণ্যচালানটির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। এবং ঘনচিনির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শুল্ককর হার ৬১ দশমিক ৮০ শতাংশ।

তিনি আরো জানিয়েছেন, ঘনচিনি একটি কৃত্রিম মিষ্টিকারক, যা সাধারণ চিনির চেয়ে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ গুণ বেশি মিষ্টি। বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন, বেকারি আইটেম, আইসক্রিম, বেভারেজ, জুস, চকোলেট, কনডেন্সড মিল্ক এবং শিশু খাদ্য তৈরিতে সাধারণ চিনির পরিবর্তে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী এই ক্ষতিকারক কৃত্রিম উপাদানটি ব্যবহার করে থাকেন। ঘনচিনি দিয়ে তৈরি খাদ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ঘনচিনির দ্বারা প্রস্তুত করা খাদ্য ক্যান্সারসহ কিডনি ও লিভারের জটিল রোগের কারণ হতে পারে। ঘনচিনির অপব্যবহার রোধকল্পে সরকার পণ্যটিকে আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২৪ এর আমদানি নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় ঘনচিনি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২৪ এর বিধান মোতাবেক নিষিদ্ধ ঘনচিনি আমদানি করায় কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর বিধান মোতাবেক পণ্যচালানটি আটক এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বাংলাদেশ কাস্টমসের যে অঙ্গীকার তার যথার্থ প্রতিফলন আমদানি নিষিদ্ধ ঘনচিনির এই চালানটি আটক।

Add Comment

Click here to post a comment

space for add

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১