সারাদেশ থেকে সেরা খুদে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবনী ও গবেষণাধর্মী বিজ্ঞান প্রকল্প প্রদর্শন, কুইজ প্রতিযোগিতা এবং দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজধানীর সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে শেষ হলো ‘বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা বিজ্ঞান উৎসব’-এর তৃতীয় আসর।
জাতীয় পর্বে ‘দ্য সল্টিং আউট’ নামের একটি প্রজেক্ট তৈরি করে দেশসেরা হয়েছে বিএএফ শাহীন কলেজের আরীব বিন ফারুক ও সাইম ইবনে সারওয়ার। একইভাবে ‘পোকেডেক্স: দ্য আল্টিমেট অ্যাডভান্সড এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট’ প্রজেক্ট তৈরি করে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে বরিশালের ব্রজমোহন স্কুলের এস. এম. সাইফান শাফি। আর ‘ক্লাইমাকোর’ নামের প্রজেক্ট তৈরি করে তৃতীয় সেরা হয়েছে সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষার্থী রায়িন আর রাদ। চূড়ান্ত পর্বে মোট ৭০টি প্রজেক্ট থেকে ১৫টি সেরা প্রজেক্টকে পুরস্কৃত করা হয়।
বিজ্ঞান প্রজেক্টে প্রথম তিনটি গ্রুপকে বিকাশের সৌজন্যে ল্যাপটপ এবং কুইজের দুই ক্যাটাগরিতে সেরাদের বিজ্ঞানচিন্তার সৌজন্যে ট্যাব ও বিকাশের পক্ষ থেকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়াও বিজয়ী দলগুলোর হাতে বই, ট্রফি, মেডেল ও সনদ তুলে দেন অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার লিও জেমস পেরেরা, বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য মো. আশরাফুল হক, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ফিজিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. আরশাদ মোমেন, বিকাশের ইভিপি ও রেগুলেটরি অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান হুমায়ূন কবীর এবং রেগুলেটরি অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট সায়মা আহসান।
এবারের উৎসবের কুইজ প্রতিযোগিতায় নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ে সেরাদের সেরা হয়েছে ঢাকার পারমাণবিক শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইরাম মাহমুদ রুহান। মাধ্যমিক পর্যায়ে সেরাদের সেরা হয়েছে রংপুর জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ফাহিম ফয়সাল। আর বিশেষ কুইজে প্রথম হয়েছে ঢাকার চ্যাম্পিয়ন একাডেমির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভির হোসেন। কুইজ প্রতিযোগিতায় নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক উভয় পর্যায়ে ১৫ জন করে মোট ৩০ জনকে এবং বিশেষ কুইজে ১৪ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।
এর আগে সকালে বেলুন ও পতাকা উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করে রোবট ‘নাও’। এরপর সারাদেশের সেরা সব শিক্ষার্থী উপস্থাপন করেন তাদের উদ্ভাবনী প্রকল্প— ‘অ্যাকুয়াপনিক্স’, ‘স্মার্ট হোম অ্যান্ড লাইফ সিকিউরিটি’, ‘বাংলা ইন্টারঅ্যাকটিভ এআই মডেল’, ‘স্মার্ট ব্লাইন্ড স্টিক’, ‘স্মার্ট ব্রিজ’, ‘টার্নিং ওয়েস্টেড ওয়েল ইনটু বায়োডিজেল’সহ নানা চমৎকার প্রজেক্ট। কয়েক ধাপ যাচাই-বাছাই শেষে সেরা প্রজেক্টগুলো নির্বাচিত করা হয়।
উল্লেখ্য, আগের দুই আসরের ধারাবাহিকতায় এ বছরের ৩০ আগস্ট ঢাকা আঞ্চলিক পর্বের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিকাশ ও বিজ্ঞানচিন্তার আয়োজনে বিজ্ঞান উৎসবের তৃতীয় আসর। ঢাকার পর রংপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট ও খুলনায় বিজ্ঞান উৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হয় আঞ্চলিক পর্ব। আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ীরা অংশগ্রহণ করেন ঢাকায় অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত পর্বে।
এ ছাড়া এবারের আয়োজনে ৭ বিভাগে প্রায় ৩৭০টি স্কুলের ৪০০-রও বেশি বিজ্ঞান প্রকল্প প্রদর্শনী এবং প্রায় ৩,৫০০ শিক্ষার্থী কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। সব মিলিয়ে এবারের বিজ্ঞান উৎসবে অংশ নেয় ৫,০০০-এরও বেশি শিক্ষার্থী।
এবারের জমকালো সমাপনী পর্বে শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শন ও কুইজের পাশাপাশি বিশেষ আয়োজন ছিল রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা, সুডোকু, রোবট শো, প্রশ্নোত্তর পর্ব, ম্যাজিক শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ মনোমুগ্ধকর সব আয়োজন।






Add Comment