শেষ মুহূর্তে এগিয়ে থেকেও জয় তুলে নেওয়ার স্বপ্ন আবারও ভেঙে গেল বাংলাদেশের। নেপালের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ২-২ গোলে ড্র করে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের আরেকটি ম্যাচ হতাশাতেই শেষ করতে হলো হামজা চৌধুরী-জামাল ভূঁইয়াদের। কয়েকদিন আগেই ইনজুরি সময়ে গোল হজম করে হংকং চায়নার কাছে ৪-৩ গোলে হারতে হয়েছিল লাল,সবুজের দলকে; সেই কষ্ট যেন আবার ফিরে এল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে।
বাংলাদেশের শুরুটা ছিল অস্থির। প্রথমার্ধে ডিফেন্সের ভুলে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে দল। মাঝমাঠে ছন্দ থাকলেও আক্রমণে ধার ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশ, আর সেই সময়ই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন হামজা চৌধুরী। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার উঁচু করে দেওয়া বল বক্সের মধ্যে উড়ন্ত অবস্থায় বাইসাইকেল কিকে জালে পাঠান এই প্রবাসী তারকা। স্টেডিয়ামের দর্শক তখন উল্লাসে ফেটে পড়ে; সেই মুহূর্ত হয়ে ওঠে ম্যাচের সবচেয়ে উজ্জ্বল দৃশ্য।
গোলের পর আরও চার মিনিট যেতেই বাংলাদেশের উল্লাস দ্বিগুণ হয়। বক্সের মধ্যে রাকিবকে ফাউল করলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিক নিতে এগিয়ে এসে চমৎকার ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়ান হামজা। এই দুই গোলেই ম্যাচে বাংলাদেশ শক্ত অবস্থানে চলে যায়, কিন্তু এরপর আর তেমন কোনও সুযোগ তৈরি করতে পারেনি স্বাগতিকরা। বরং চোটে পড়ে মাঠ ছাড়তে হয় হামজা ও জায়ানকে, যা পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তোলে।
নেপাল সুযোগ বুঝে উঠে আসে ম্যাচে। ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে অনন্ত তামাং-এর নিখুঁত ফ্লিক বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুলকে পরাস্ত করে জালে জড়ায়। সেই গোলেই হারিয়ে যায় বাংলাদেশের নিশ্চিত তিন পয়েন্ট, আর সংগ্রহে যোগ হয় মাত্র একটি। ফলে গ্যালারিতে হাজারো সমর্থকের হতাশা যেমন বেড়েছে, তেমনি ড্রেসিংরুমেও নেমে এসেছে ভারী নীরবতা।
ম্যাচ শেষে হামজা সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শেষ মুহূর্তের গোল হজম করা আরও এক রাতে কষ্টের স্মৃতি হয়ে রইল, তবে দল একসঙ্গে থাকলেই সামনে ভালো কিছু সম্ভব। কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা জানিয়েছেন, হামজার চোট গুরুতর নয় বলেই তাদের বিশ্বাস।
নেপালের বিপক্ষে ২০২০ সালের পর আর জয়ের মুখ দেখেনি বাংলাদেশ; পাঁচ বছরে দুটি হার ও দুটি ড্র এখন তাদের কঠিন বাস্তবতা। সামনে এখন ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, ১৮ নভেম্বর যেটি অনুষ্ঠিত হবে একই মাঠে। সেই ম্যাচে ফিরে আসার লড়াইয়ে নতুন উদ্যম নিয়ে নামতে হবে হামজা-জামালদের।






Add Comment