বেরোবি প্রতিনিধি, মোঃ সাজেদুল ইসলাম:
তিস্তা ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা ইভান চৌধুরী ওরফে (মোঃ আলামিন) রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে(বেরোবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছয় তালায় একটি কক্ষে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করে আসছে।
অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, ইভানের পড়াশোনা শেষ হয়েছে গত দুই বছর আগে। তিনি সাবেক লোকপ্রশাসন বিভাগের (২০১৫-২০১৬ সেশন) শিক্ষার্থী ও সাবেক সাংবাদিক নেতা ।
সম্প্রতি রংপুরের বেসরকারি তিস্তা ইউনিভার্সিটিতে জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করছেন। চাকরিরত অবস্থায়ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় চ্যানেল টুয়েন্টি ফোর(চ্যানেল ২৪ অনলাইন) সংবাদদাতা’সহ ১০/১২টি অনলাইন ও প্রিন্ট সংবাদপত্রে যুক্ত রয়েছেন। তিনি বেরোবিতে এখনো সাংবাদিক হিসেবে পরিচয়ে চলেন।
আরও একটি সূত্রে জানা যায়, ইভান চৌধুরী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অত্যন্ত স্নেহভাজন হওয়ায় প্রশাসনের প্রশ্রয়ে হলের আবাসিক সুবিধা নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণরুমের তিন শিক্ষার্থী জানান, অবৈধভাবে সাবেক শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবী আরাম করে রুমে থাকে।আমরা হলে সীট বৈধ করেও নিজের সীট পাই না থাকতে হয় গণরুমে।প্রভোস্টকে বারবার জানালে শুধু আশ্বাস দেন রুমের ব্যবস্থা করে দিবেন।তৃতীয় বর্ষ শেষ করলাম গণরুমে থেকে এখনো রুম পরিবর্তন হলো না।
ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ রাশেল রানা বলেন, প্রভোস্টের কাছে ৪ বার এপ্লিকেশন দিয়েছি রুম পরিবর্তনের জন্য তিনি শুধু আশ্বাস দেন। বিবাহিত সাবেক শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবি, পড়াশোনা শেষ হওয়া ছাত্রনেতা হলের সিঙ্গেল ব্রেডের সীটে থাকেন।
ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী হেলাল মিয়া বলেন, এক রুমে চৌদ্দজন থাকি পড়াশোনার পরিবেশ নাই। আমাকে দেওয়া হয়েছিলো এক চাকুরীজীবির রুমে সেখানে আমি উঠতে পারি নাই। আমার স্থান এখন গণরুম।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, বেরোবির হলদুটি সাবেক শিক্ষার্থী, বিবাহিত, রাজনৈতিক নেতাদের দখলে থাকায় সীট বৈধ করেও নিজের সীটে উঠতে পারি না।
আরেক অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করলে সব সুযোগ প্রদান করেন হলের ছাত্র নেতারা। যারা ফার্স্ট ইয়ারে রাজনীতি করে তারা অনেকেই সিঙ্গেল বেড নিয়ে আছে। এদিকে বাধ্য হয়ে রাজনীতি না করা শিক্ষার্থীরা যাদের অনার্স-মাস্টার্স শেষ বর্ষেও ডাবল সীট ও গণরুমে থাকছে।
ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী জানান, এক সীটে তিন জন থাকি একটা নতুন বেড যুক্ত করে। সেখানে আমরা তিনজন লিগ্যাল থাকি। এক বেডে তিন সীটের ভাড়া দিতে হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. বিজন মোহন চাকির কাছে চাকুরীজীবি হলে থেকে অফিস করেন এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন,মাস্টার্স শেষ কারো হলে থাকার সুযোগ নাই।যারা চাকরি করেন তাদের বরও নাই।এমফিলের ছাত্র হলে থাকলে প্রশাসনের পারমিশন নিয়ে থাকতে হবে।
অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক পরিচয়ে চলেন এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন,এই বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি।হলের প্রভোস্টকে অনুরোধ করব ব্যবস্থা নিতে।
ইভান চৌধুরী ওরফে মোঃ আলামিনের বিষয়ে তিস্তা ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার নিশ্চিত করেছেন তিনি তিস্তা ইউনিভার্সিটিতে জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে যুক্ত আছেন।