আরেকটি এল ক্লাসিকো। আরেকটি বিতর্ক। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে শুধু লা লিগায় গোল লাইন প্রযুক্তি না থাকায় ক্ষোভ ঝেড়েছে বার্সেলোনা। কারণ ১-১ এ সমতায় থাকা ম্যাচটিতে ২৮ মিনিটে কর্নার থেকে লামিনে ইয়ামালের প্রচেষ্টা রুখে দেন মাদ্রিদ গোলকিপার আন্দ্রি লুনিন।
কিন্তু বলটি গোললাইনের ভেতরে চলে গিয়েছে বলে দাবি জানাতে থাকে বার্সেলোনা। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তির রায় মেনে গোল দেননি মাঠের রেফারি। ধারাভাষ্যকারেরাও সে সময় গোললাইন প্রযুক্তির অনুপস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তবে সে যা ই হোক, শেষ হাসিটা হেসেছে কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনাকে তারা হারিয়েছে ৩-২ ব্যবধানে।
এর আগে নিজেদের ঘরের মাঠ বার্নাব্যুতে কার্লো আনচেলোত্তির দল ম্যাচের ৬ মিনিটে ক্রিশ্চিনসেনের গোলে ১-০ তে পিছিয়ে পড়ে। নিজেদের মাঠের ছাদ বন্ধ করে এইদিন রীতিমতো রুদ্ধদ্বার করে বার্সাকে হোম ক্রাউডের সামনে চাপে রাখতে চাওয়া মাদ্রিদ অবশ্য ম্যাচের শুরুতেই গোল হজম করে বসে। কিন্তু সমতায় আসতে দেরি করেনি রিয়াল মাদ্রিদ।
বার্সার সেই গোলের মাত্র ১২ মিনিট পর বক্সে লুকাস ভাসকেজকে সমন্বিত প্রচেষ্টায় ফাউল করেন পাও কুবারাসি ও হোয়াও কানসেলো। পেনাল্টি পেয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। স্পটকিক থেকে বল জালে জড়াতে ভুল করেননি ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুস। যদিও এরপর প্রথমার্ধে যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে ডান পায়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন বার্সার মিডফিল্ডার ফ্রেঙ্কি ডি ইয়াং।
প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে ক্রিশ্চিনসেনের বদলি হয়ে নামা ফারমিন লোপেজ বার্সাকে গোল এনে দেন ৬৯ মিনিটে। লুনিন বল ধরতে ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নিয়ে ফিরতি শটে গোল করে বার্সাকে আবারও এগিয়ে দেন লোপেজ। এর মিনিট পাঁচেক আগে রবার্ট লেভানডফস্কিকে তুলে ফেরান তোরেসকে মাঠে নামায় বার্সা। অফসাইডের প্যাঁচে পরে তোরেসও পরে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন।
যদিও পিছিয়ে পড়া রিয়াল চার মিনিট পরেই সমতায় ফেরে। ভলিতে ম্যাচের ৭৩ মিনিটে গোল করে ভাসকেজ। অন্যদিকে গোটা ম্যাচে অনেকটা নিষ্প্রভ থাকা জুড বেলিংহাম আবারও দেখিয়ে দিলেন প্রয়োজনের সময় তিনি কতটা দরকারি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষে অতিরিক্ত ১ মিনিটে ইংলিশ এই তারকার পা দিয়েই আসে মাদ্রিদের জয়সূচক গোলটি। আর তাতেই বার্সা শিবিরে হতাশার ছাপ রেখে আরেকটি এল ক্লাসিকো জয় করে লা লিগার শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেলো রিয়াল মাদ্রিদ। এই নিয়ে লা লিগায় ২৬ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়েছে রিয়াল।
আর এই মৌসুমে বার্সার বিপক্ষে টানা তৃতীয় জয় পেলো রিয়াল। এই জয়ে ৩২ ম্যাচে ৮১ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষস্থানে রইলো রিয়াল। সমান ম্যাচ খেলে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জাভির শিষ্যরা। ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে জিরোনা। হাতে ৬ ম্যাচ বাকি রেখেই বার্সার সঙ্গে ১১ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে গেলো রিয়াল মাদ্রিদ। নিজেদের বাকি থাকা ৬ ম্যাচ থেকে ৮ পয়েন্ট তুলে নিলেই ৩৬তম লিগ জয় নিশ্চিত হবে রিয়ালের। অন্যদিকে বার্সেলোনা ট্রফিবিহীন মৌসুম শেষের অপেক্ষায়।