সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ‘এফোর’ সাইজের কাগজ আমদানির চালানে অভিনব কায়দায় লুকানো সিগারেট উদ্ধার করেছে কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ। এ চালানে ২৪ হাজার ৯৯০ কার্টনে ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার শলাকা ওরিস ও মন্ড ব্রান্ডের সিগারেট রয়েছে।
কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের (১৪১ পাঁচলাইশ, মায়ানীড়) আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জেকে স্টেশনারি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ‘এফোর’ সাইজের কাগজ ঘোষণা দিয়ে এক কনটেইনার পণ্য আমদানি করে। ঝুঁকিপূর্ণ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, আমদানিকারক, রফতানিকারক, বন্দর, পণ্য ও পণ্যের তৈরি দেশ বিবেচনায় কনটেইনার সংশ্লিষ্ট বিল অব ল্যাডিং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ব্লক করে রাখে কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইর জাবেল আলি বন্দর থেকে ‘এমভি এক্স-প্রেস নুপটেজ’ জাহাজে কনটেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসলেও পণ্য খালাসের লক্ষ্যে কোনো কার্যক্রম নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। সোমবার (১৫ মার্চ) নিয়ম অনুযায়ী ফোর্সড কিপ ডাউন করে পণ্য পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের চৌকস অডিট, ইনভেস্টগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম। কনটেইনার থেকে সব পণ্য বের করে আনার পর দেখা যায়, ৪৮টি পলিথিনে মোড়ানো প্যালেটের প্রতিটিতে ৪৮টি কার্টন রয়েছে যার মধ্যে প্রথম আটটি প্যালেটে ছিল শুধুই কাগজ এবং নবম প্যালেট থেকে পরবর্তী প্যালেটগুলোতে ৪৮ কার্টনের মধ্যে উপরের স্তরের ১২টি কার্টনে শুধুই কাগজ এবং দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ স্তর পর্যন্ত ৩৬টি কার্টন খুলে উপরে এক রিম এফোর সাইজের কাগজ পাওয়া যায় এবং কাগজের নিচে আলাদা অন্য একটি কার্টনে পাওয়া যায় অভিনব কায়দায় লুকানো সিগারেট। কায়িক পরীক্ষায় ২৪ হাজার ৯৯০ কার্টুন (৪৯ লাখ ৯৮ হাজার) শলাকা ওরিস এবং মন্ড ব্রান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়। এছাড়া এফোর সাইজের কাগজ পাওয়া যায় ১৩ দশমিক ৭ টন।
এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি একই প্রক্রিয়ায় আমদানি করা অপর একটি প্রতিষ্ঠানের (করিম ট্রেডিং) পণ্যচালান আটক করা হয় এবং কায়িক পরীক্ষায় ২৩ হাজার ০০০ কার্টুন (৪৬ লাখ শলাকা) ইজি ও মন্ড ব্রান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়।
কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার সহকারী কমিশনার মো. রেজাউল করিম বাংলানিউজকে জানান, সোমবার আটক করা পণ্যচালানে চোরাচালানের অপচেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস প্রশাসনের কঠোর নজরদারি এবং কর্মকর্তাদের নিষ্ঠা ও আন্তরিকতায় আগের মতো এ অপচেষ্টাও নস্যাৎ করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। পণ্যচালানটিতে শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য পণ্য সিগারেট আমদানি করে প্রায় ১২ কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়।
এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম।