শাহীন আলম বিশেষ সংবাদদাতা: কুষ্টিয়া উত্তর লাহিনী মন্ডলপাড়ায় জমি নিয়ে বিরোধে চেতনা নাশক মিশিয়ে ডাব পান করিয়ে বৃদ্ধ চাচাকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে ভাতিজার বিরুদ্ধে। কুষ্টিয়া থেকে প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে আটকে রাখা হয় চাচাকে। পরে তাকে নাটোরের লালপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযোগ করা হচ্ছে জমির কাগজপত্র কেড়ে নেয়া হয়েছে চাচার কাছ থেকে।
ঘটনার শিকার এসএম গোলাম কুদ্দুস (৮৪), কুষ্টিয়ার উত্তর লাহিনী মন্ডলপাড়ার বাসিন্দা। চেতনা নাশক দিয়ে অপহরণ করে আটকে রাখার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন। তিনি জানান, তারা স্বপরিবারে বর্তমানে যশোরের অভয়নগরে বসবাস করেন। তার স্বামী গোলাম কুদ্দুস জমাজমি দেখভাল করতে মাঝে মধ্যেই কুষ্টিয়া আসেন। তেমনি কুষ্টিয়া এসে গত ২২ এপ্রিল নিখোঁজ হন।
কুষ্টিয়া মডেল থানায় দায়ের করা এজাহারে সুফিয়া খাতুন উল্লেখ করেছেন উত্তর লাহিনী থেকে ২২ এপ্রিল বিকেলে গোলাম কুদ্দুসকে তার ভাতিজা আনোয়ার রহমান বালা অপহরণ করেন। সেসময় কুদ্দুসের কাছে তার জমির কাগজপত্রের একটি ব্যাগ ছিলো। সুফিয়া খাতুন উল্লেখ করেছেন মূলত: সম্পদ আত্মসাৎ করতে ভাতিজা চাচাকে সুকৌশলে চেতনা নাশক মিশিয়ে ডাবের পানি পান করান। এরপর অসুস্থ্য বোধ করলে সাদা রঙের প্রাইভেট গাড়ীতে করে পাবনার দিকে নিয়ে যায়। এরপর খোঁজাখুজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরের দিন ২৩ এপ্রিল দুপুরে মোবাইল ফোনে জানানো হয় জায়গাজমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই তাকে আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু কোথায় আটকে রেখেছে তা জানানো হয়নি। ওইদিন রাতে তাকে নাটোর জেলার লালপুর হাসপাতালের সামনে থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরে তাকে লালপুর থানা থেকে নিয়ে আসা হয়।
সুফিয়া খাতুন বলেন, পূর্ব থেকেই ভাতিজাদের সঙ্গে চাচা আব্দুল কুদ্দুসের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ আছে। তিনি মামলায় আসামি হিসেবে উত্তর লাহিনী মন্ডল পাড়ার মৃত বজলুর রহমানের ৪ ছেলে আনোয়ার হোসেন বালা (৬০), হাবিবুর রহমান ঘাপ্পি (৫০), আলতাবুর রহমান কালা (৫৫) ও মশিউর রহমান টরিক (৫২) এবং মৃত রওমন আলী মণ্ডলের ছেলে তৌহিদুর রহমান ঝুনো (৪৮) এর নাম উল্লেখ করেছেন।
কুষ্টিয়া মডেল থানায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছেন এসআই সাজু মোহন সাহা। তিনি বলেন, ঘটনার সময়ই মামলার প্রধান আসামি আনোয়ার হোসেন বালাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতে ভিকটিমের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীও নেয়া হয়েছে। বাকী আসামিদের ব্যাপারেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কথা হয় কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ সোহেল রানার সঙ্গে। তিনি বলেন- ভিকটিম তার জবানবন্দিতে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ায় সময় প্রধান আসামি বালা ছিলো বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ থাকায় বাকী আসামীদের ব্যাপারেও খোঁজখবর নিচ্ছেন তারা। এ ঘটনায় জড়িতদের সকলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।