মোঃ আফ্ফান হোসাইন আজমীর, রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুরে মাদক ও অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায় এক রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। রেস্তোরাঁর মালিককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে হামলাকারীরা। গত বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতে রংপুর নগরীর বকুলতলায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, প্রথমে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে কিশোর গ্যাংয়ের একটি দল। পরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওই রেস্তোরাঁয় অতর্কিত হামলা চালায়। রেস্তোরাঁর মালিককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। রেস্তোরাঁ মালিক শাহরিয়ার কবিরকে গুরুতর অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থা আরও গুরুতর হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ শুক্রবার বিকেলে তাঁকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শাহরিয়ার কবির বলেন, গণেশপুর বকুলতলা এলাকার মেরাজ নামে এক কিশোরের নেতৃত্ব প্রায় ১৫ জনের একটি গ্যাং রয়েছে। কিশোর গ্যাংটি মাদক, চুরি, ছিনতাইসহ ইউটিউব দেখে ককটেল বানিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে। ককটেল বিস্ফোরণে নিষেধ করাসহ অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে বলায় এ হামলা চালানো হয়। অতর্কিত এ হামলায় তার ডান হাতের একটি আঙুলের প্রায় পুরোটা কেটে গেছে। ডান পায়ের হাঁটুতে চোট লেগেছে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, ওই কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খোলে না। বকুলতলা এলাকার বাসিন্দা পাপ্পু মিয়া বলেন, এর আগেও এই গ্যাংটি বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করেছে। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা নেয় না।
শাহরিয়ার কবিরের বোন শরিফা সুলতানা বলেন, ‘আমার ভাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে এখন চাকরির পড়াশোনার পাশাপাশি এই হোটেল দেখাশোনা করে। দীর্ঘদিন ধরেই এই কিশোর গ্যাংটির অনৈতিক কাজে বাধা দিয়ে আসছিল আমার ভাই। এ কারণেই বুধবার (১ মে) মেরাজসহ বেশ কয়েকজন কিশোর আমাদের হোটেলের সামনে পরপর তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করে। এতে আমার ভাই বারণ করলে পরে তার ওপর হামলা চালায়।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ–পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। অভিযুক্তদের আটকে অভিযান চলছে।’
উল্লেখ, রংপুরে এ ধরনের আরও প্রায় ১০ থেকে ১৫টি ছোট ছোট কিশোর গ্যাং রয়েছে। এরা মাদক বেচাকেনা, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।