নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোটে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় ইতিমধ্যে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ হয়ে গেছে, চলছে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা। তবে এবারের নির্বাচন নিয়ে এলাকার রাজনৈতিক মহলে নেই তেমন কোনো আলোচনা। এছাড়াও সাধারণ ভোটার সহ জনসাধারণের মাঝে তেমন উৎসাহ বা আগ্রহ লক্ষ্যণীয় নয়। বুধবার (১৫ মে) নির্বাচনী প্রচারণার তৃতীয় দিনেও উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারে ঘুরে নিরুত্তাপ ভোটের পরিবেশ দেখা গেছে।
নজিরবিহীন এমন ভোটবিমুখতার প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে এবারের উপজেলা নির্বাচনে আ. লীগের হেভিওয়েট কোনো প্রার্থী অংশগ্রহণ না করা। এতে বিএনপি থেকেও কোনো হেভিওয়েট প্রার্থী অংশ নেয়নি। দলীয় প্রতীক বিহীন এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে যেসব প্রার্থী ভোটে অংশ নেওয়ার কথা ছিলো বা যাদের নিয়ে জনসাধারণের মাঝে কৌতূহল ছিলো, শেষ পর্যন্ত তারা ভোটের মাঠে না আসায় নির্বাচন উত্তাপহীন হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনে হেভিওয়েট চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম নাগরপুর উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কুদরত আলী। তিনি গত নির্বাচনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থেকেও পরাজিত হয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি অংশ নেয়নি। এতে টানা তিন বার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুছ ছামাদ দুলাল এবার অনেকটা ফাঁকা নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। যদিও টাঙ্গাইল ৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আবদুল বাতেন এর পুত্র ব্যারিস্টার কে এম সালমান শামস জিৎ এবং সদ্য সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির এবার প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ভোটের মাঠ দাপিযে় বেড়াচ্ছে।
গয়হাটা বাজার ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন বলেন, এবার উপজেলা নির্বাচনের কোনো আমেজ নেই। প্রার্থীদের আনাগোনা নেই বললেই চলে, শুধু মাইকিং শুনি মাঝে মধ্যে। দপ্তিয়র ইউনিয়নের ভূগোল হাট বাজারের মুদি দোকানি তোতা মিয়া জানায়, আমাদের এখানে এখনো কোনো প্রার্থী ভোট চাইতে আসে নাই, এতেই বোঝা যায় নির্বাচনের কেমন পরিবেশ বিরাজ করছে। এবারের নির্বাচনে প্রার্থী কারা সেটাও ভালো মতো জানা নেই।
এদিকে, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মোট ৩ জন প্রার্থী থাকলেও ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছে মোট ৯ জন প্রার্থী। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদেও শেষ পর্যন্ত কিছু আলোচিত ব্যক্তিরা অংশ না নেওয়ায়, এখানেও জনসাধারণের তেমন আগ্রহ দেখা মিলছে না। নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জনপ্রিয় সাবেক ছাত্রনেতা মো. আনিসুজ্জামান তুহিন নির্বাচন তফসিল পূর্বে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুরোদমে জনসংযোগ শুরু করেছিলেন কিন্তু ব্যাপক জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেননি। এছাড়াও ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম চাঁন মিয়া’র নাতি জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সাংবাদিক ইউসুফ হোসেন লেনিন ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও নির্বাচন এড়িয়ে যান। এদিকে, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোটের মাঠে প্রার্থী হয়েছে একই সংগঠন নাগরপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি বাবর আল মামুন ও সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক হোসেন। নাগরপুর উপজেলা কিন্ডারগার্টেন সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মোস্তফা সহ মোট ৯ জন প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছামিনা বেগম শিপ্রা, জরিনা বেগম ও জিয়াসমিন আক্তার সহ মোট ৫ জন প্রার্থী রয়েছেন।
জনসাধারণে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই, এই বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নাগরপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. আরশেদ আলী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, নির্বাচন পরিবেশ স্বাভাবিক আছে এবং নির্বাচন উৎসবমুখর করতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।