1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন

শিষ্যের কাছে গুরুর বিশাল পরাজয় ৮ প্রার্থী তাদের জামানত হারাচ্ছেন

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪
মোঃ নাজিম উদ্দীন কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শিষ্যের কাছে ২১ হাজার ৬৫৭ ভোটের বড় ব্যবধানে গুরুর বিশাল  পরাজয়ে অনেকটা নিস্তব্দ আওয়ামীলীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা। অপরদিকে নির্বাচন বিধি অনুযায়ী কাঙ্খিত ভোট না পাওয়ায় ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে আটজন তাদের জামানত হারাচ্ছেন। শিষ্যের কাছে গুরুর পরাজয়ের কারণ ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিসহ আট প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া নিয়ে নানা হিসাব কষছেন উপজেলাবাসী।
এলাকাবাসী, প্রার্থী ও তাদের নেতাকর্মী-সমর্থক সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার  কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৯টি ইউনিয়ন ও কালিয়াকৈর পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৬৩ হাজার ৭৯৪ জন। এ নির্বাচনে তিনজন চেয়ারম্যান, সাতজন ভাইস চেয়ারম্যান ও পাঁচজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী অংশ গ্রহণ করে। এসব পদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ চেষারম্যানের চেয়ারটি। এই চেয়ারম্যান পদের জন্য কাগজে-কলমে একই দলের তিনজন প্রার্থী হন। তাদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী (কাপ পিরিচ) মুরাদ কবীর শেষ মুহুর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাই এ পদে লড়াই করেছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও  উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সিকদার (আনারস)  এবং তারই এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সহচর, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীপুর জেলা যুবলীগের যুগ্মআহবায়ক সেলিম আজাদ (মোটরসাইকেল)। নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারন ভোটাররা এই দুই নেতার লড়াইকে গুরু-শিষ্যের লড়াই হিসেবে দেখেন। কিন্তু গত মঙ্গলবার শিষ্য সেলিম আজাদ মোটরসাইকেল প্রতীকে ৮৩ হাজার ৯৬১ ভোট পেয়ে বিজয় অর্জন করেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি তার গুরু কামাল উদ্দিন সিকদার আনারস প্রতীকে ৬২ হাজার ৩০৪ ভোট পান। এছাড়াও তালা প্রতীকে ৪৯ হাজার ৪৬২ ভোট পেয়ে মনোয়ার হোসেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও হাঁস প্রতীকে ৬৮ হাজার ৪৫৫ ভোট পেয়ে শরিফা আক্তার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় অর্জন করেন। কিন্তু এ নির্বাচনের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ চেয়ারম্যান পদে শিষ্যের কাছে ২১ হাজার ৬৫৭ ভোটের বড় ব্যবধানে গুরুর পরাজয়ে অনেকটা নিস্তব্দ আওয়ামীলীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা। তাদের ভাষ্য, কামাল উদ্দিন সিকদার দুই বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু নির্বাচিত হয়ে উন্নয়নে ভুমিকা রাখলেও জনগণের কাছে যাননি কামাল সিকদার। ফলে ধীরে ধীরে তিনি জনবিমুখ হয়ে পড়েন। তার পক্ষে বেশিরভাগ নেতাকর্মী থাকলেও তারা শুধু নিজের পকেট ভারি করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। পক্ষান্তরে, তার শিষ্য সেলিম আজাদ বিপুল ভোটে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েও থেমে থাকেননি। প্রত্যেকটা গ্রাম পাড়া-মহাল্লায় জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন, এখনো যাচ্ছেন। তাদের সমস্যা ও সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়িছেন এই শিষ্য সেলিম আজাদ। সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভুমিকা রাখেন। ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে প্রায় ৩ হাজারের বেশি ওয়াজ মাহফিলে যোগদান করেন। তার অনুদানের ছুয়া পড়েছে বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, মন্দিরসহ প্রতিষ্ঠানগুলোতে। এমন কোনো গ্রাম, পাড়া-মহল্লা নেই যেখানে চেয়ারম্যান সেলিম আজাদের অনুদান পৌঁছায়নি। আর এসব কারণে শিষ্যের কাছে তার গুরুর পরাজয়। অপরদিকে এ নির্বাচনে মোট ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮৫৬ ভোট কাস্টিং হয়। এর মধ্যে হেভিওয়েট চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুরাদ কবীর (কাপ পিরিচ) ৫০৬, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আ ফ আ হা জেহাদী মোজাদ্দেদী (টাইপ রাইটার) ২ হাজার ৭৫০, মতিউর রহমান মাইক (মাইক) ৩ হাজার ৮৭০, তোফাজ্জল হোসেন মৃধা (উড়োজাহাজ) ৪ হাজার ৩০৪, উপজেলা শ্রমিকলীগের সাধারন সম্পাদক হারিছ খান (বই) ১৪ হাজার ৯৭৭,  মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আসমা খাতুন (পদ্ম ফুল) ১৭ হাজার ১১৯, নাজমা সরকার (ক্যামেরা) ১২ হাজার ৩৯০ ও সুমি আক্তার (কলস) ২০ হাজার ৮৮৭ ভোট পান। মোট ভোট কাস্টিংয়ের ১৫ শতাংশের কম ভোট পাওয়া তাদের আটজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সেলিম আজাদ বলেন, বিপুল ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করায় প্রাণের কালিয়াকৈরবাসীকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই। জনগণের সেবা করার জন্য তাদের একজন প্রতিনিধি আমাকে বেচে নিয়েছেন। সকল নেতাকর্মী ও জনগনের মতামত নিয়ে সুন্দর কালিয়াকৈর গড়ে তোলা হবে। যেখানে হিংসা-বিদ্বেষ, প্রতিহিংসা থাকবে না। এছাড়াও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশসহ বিভিন্ন সেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দিবো। তবে উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে মাদক, সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, এ উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ, সুন্দর ও নিরপেক্ষ হয়েছে। এখানে একজন চেয়ারম্যান, একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তবে মোট ভোট কাস্টিংয়ের ১৫ শতাংশের কম ভোট পেলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি