ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য বরাদ্দ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) আগুন লাগার পর রোগী স্থানান্তরের সময় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৭ মার্চ) সকাল আটটার পরপর এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে তিনজন রোগী মারা গেছেন তাদের কেউ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়নি।’
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ‘আপনারা জানেন করোনা আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীরা আইসিইউতে থাকে। আজ সকালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সসহ অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীরা ছুটে গিয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগীদের প্রথমেই হাসপাতালে অন্যান্য আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। স্থানান্তরের পর তিনজন রোগীর মৃত্যু হয়। এর সঙ্গে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কোনো যোগসূত্র নেই।’
প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে মৃত্যু হচ্ছে বলে তিনি জানান। এদিকে মারা যাওয়া তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- কাজী গোলাম মোস্তফা (৬৬), আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (৪৮) ও কিশোর চন্দ্র রায় (৬৮)। এর মধ্যে কাজী গোলাম মোস্তফার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার উজানী গ্রামে। তিনি ঢাকার দক্ষিণখানে থাকতেন। আর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর থানার আটিগ্রামে। এছাড়া কিশোর চন্দ্র রায়ের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার সখিপুরে। তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে থাকতেন।
ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল আটটা ১০ মিনিটে ঢামেক-২ হাসপাতালের তৃতীয় তলার আইসিইউতে এয়ারকন্ডিশনার থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুন তেমন বেশি না ছড়ালেও পুরো কক্ষ ধোঁয়ায় ভরে যায়। এ সময় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগীদের অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
কর্তব্যরত চিকিৎসক নার্সসহ অন্যান্যরা দ্রুত রোগীদেরকে আইসিইউ থেকে সরিয়ে নেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি দল আটটা ১৫ মিনিটে আইসিইউ থেকে দুজন রোগীকে উদ্ধার করে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স কন্ট্রোল রুমের অপারেটর জিয়াউর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে- আইসিইউর এয়ারকন্ডিশনার থেকে ছোট্ট আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় কক্ষটি ধোঁয়ায় ভরে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত আইসিইউ থেকে রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। আহত অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢামেক হাসপাতাল-২ এর আইসিইউতে মূলত করোনা রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে।’ হাসপাতালটির হৃদরোগ বিভাগের একজন রোগীর অভিভাবক বলেন, ‘আগুন লাগার খবর পেয়ে গোটা হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় অন্যান্য ওয়ার্ডের রোগীরাও নিচে নামতে শুরু করেন।’