এবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। পাশাপাশি তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে কয়েক কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
ইতোমধ্যে ১৬ কোটি টাকার সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। খোঁজ মিলেছে ৭০০টির বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।
আদালতে জমা দেয়া দুদকের প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন ফয়সাল। রাজধানীর ভাটারায় তার নামে রয়েছে ৫ কাঠার প্লট, একই এলাকায় তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারের নামেও আছে ৫ কাঠার আরেকটি প্লট। ফয়সাল ও স্ত্রীর নামে নারায়ণগঞ্জে রয়েছে কোটি টাকার জমি।
শুধু তাই নয়, ফয়সালের শ্বশুর আহমেদ আলীর নামে রাজধানীর রমনা এলাকায় গত বছর অক্টোবরে একটি ফ্ল্যাট কেনা হয়, যার মূল্য দেখানো হয় ৯৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এছাড়া শাশুড়ি মমতাজ বেগমের নামে ২০২২ সালে খিলগাঁওয়ে ১০ কাঠার একটি প্লট কেনা হয়। এসব সম্পদ করদাতাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বদলি বাণিজ্য ও ঘুষের টাকায় কেনা হয়েছে জানিয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলছেন, ইতোমধ্যে ফয়সালের বেশ কিছু সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত, যার মূল্য অন্তত ১৬ কোটি টাকা।
শুধু সম্পদই নয়, নগদ অর্থের হিসাবও বেশ লম্বা। ব্যাংকে টাকা জমিয়েছেন আত্মীয়স্বজন সবার নামে। ফয়সাল, তার স্ত্রী ও শ্বশুরের নামে ৫০ লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র রয়েছে। স্ত্রী, শ্বশুর ও তার স্বজনদের ১৯টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৬ কোটি ৯৬ লাখ ৫০ হাজার ৯০৮ টাকা। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয়ের উৎস গোপনের জন্য নিজের নামসহ তার আত্মীয়স্বজনের নামে ৭০০টির বেশি হিসাব খোলেন।
দুদকের আইনজীবী বলছেন, এসব টাকা ফয়সাল বিদেশে পাচার করেছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাদের নামে সম্পদ কেনা হয়েছে তারাও আসবেন আইনের আওতায়।
কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল কর ক্যাডার হিসেবে ২০০৫ সালে সহকারী কমিশনার পদে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে চাকরি শুরু করেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে লিগ্যাল ও ট্যাক্স বিভাগের প্রথম সচিব।