কিবরিয়া চৌধুরী: এনবিআরের সদস্য মতিউর রহমান। ছাগল কান্ডে ধরা পড়েন। নজিরবিহীন সম্পাদের মালিক। সরাসরি কোনো মিডিয়াতে মতিউরের অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদদি আসেনি। মতিউরের বিরুদ্ধে তার গোপন প্রতিপক্ষ চারবার দুদকে অভিযোগ দিয়েছিল। দুদক সেই অভিযোগ আমলেও নিয়েছিলো। কিন্তু তদন্ত করে মতিউরকে সাদা সনদ দিয়েছে দুদক। মতিউরের আয় বহির্ভূত সম্পদ দুদক সে সময় খুজে পাইনি।সেসময় দুদকের যারা চেয়ারম্যান ও সদস্য এবং কর্মকর্তা ছিলেন তারা মতিউরের দুর্নীতির দায় এড়াতে পারেন না। সংশ্লিষ্ঠ সূত্র মতে মতিউর চট্টগ্রামে কাস্টমস কমিশনার থাকা সময় মূলত অবৈধভাবে সম্পদ গড়ার কাজটি শুরু করেন। ঢাকায় এসে বৃহদ করদাতা ইউনিটের কমিশনার হন। (এলটিইউ) বৃহদ করাদাতা ইউনিট। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সর্বোচ্চ করদাতাদের ইউনিট এটি। এখানে সর্বনিম্ন একশত কোটি টাকা থেকে শুরু হাজার হাজার কোটি টাকা করদাতাদের সংগ্রাহক এলটিইউ। এনবিআরের সর্বোচ্চ ভ্যাট আদায়কারী ইউনিট এটি। এই ইউনিটের দেশের বড় বড় কর্পোরেট কোম্পানি, বহুজাতি কম্পানি ও সরকারি প্রতিষ্ঠান তালিকায় রয়েছেন। বিশেষ করে কর্পোরেট কোম্পানি, বহুজাতি কোম্পানি ভ্যাট আদায়ের এই ইউনিটের কমিশনার ছিলেন মতিউর। দেশের মিডিয়া মালিকদের যত কোম্পানি সবাই এলটিইউ তালিকাভূক্ত। ফলে কোনো মিডিয়ায় মতিউরের খবর প্রকাশিত হয়নি। বড় বড় কোম্পানি গুলো মতিউরের থেকে বৃহদ সুবিধা নিতেন এবং মতিউরকে সুবিধা দিতেন। রাজস্ব খাতে শত শত কোটি টাকা না দিয়ে বৃহদ কোম্পানি গুলো মতিউরকে কয়েক কোটি টাকা দিয়ে ভ্যাট প্রতিবেদন করিয়ে নিতেন। এমন কোনো বৃহদ করদাতা প্রতিষ্ঠান নেই (সারকারি প্রতিষ্ঠান ব্যতীত) যারা মতিউরিকে সুবিধা না দিয়ে ভ্যাট সনদ নিতো। মতিউরকে বৃহদ করদাতারা সুবিধা দিয়ে মস্ত বড় আর্থিক আইকনে পরিণত করেছে। বৃহদ করদাতা যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মতিউরের অর্থের যোগানদাতাদের নাম বেরিয়ে আসবে। মতিউর এলটিইউ তে কমিশনার থাকা অবস্থায় পাচ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট মওকুফের প্রস্তাব এসেছিল। তখন এনবিআরের চেয়ারম্যান ছিলেন নজিবুর রহমান। তিনি পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। তখন ওই পাচ হাজার কোটি টাকার ভ্যাট মওকুফের প্রস্তাব নিয়ে কেবল মাত্র দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি পত্রিকায় রিপোর্টের পর সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ওই প্রস্তাব নাকচ হয়। একই সময় বেসরকারি খাতে বেশ কয়টি বৃহদ কর্পোরেট কোম্পানি ভ্যাট পরিশোধ নিয়ে অভিযোগ উঠে। এসব অভিযোগ কোনো মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়নি। দৈনিক জাতীয় অর্থনীতিতে কিছু অভিযোগ প্রকাশিত হয়েছে। ওই অভিযোগ গুলোর কোন মীমাংসা না করে মতিউর সুবিধা পেয়ে সমাধান করেছে। হাজার হাজার কোটি টাকার ভ্যাট ফাকির কবলে যেসব কর্পোরেট কম্পানি করেছিল তারা সারাসরি মতিউরকে ম্যানেজ করে সনদ নিয়েছে। মতিউর হাজার কোটি টাকার ভ্যাট সরকারের ঘরে জমা না করে নিজের পকেটে শতকোটি টাকা পকেটস্থ করে প্রায় লাক্ষ কোটি টাকার ভ্যাট থেকে সরকার, জাতিকে তথা জনগনকে বঞ্চিত করেছে।