বৈষম্যমূলক পে-স্কেল ও পেনশন স্কেলের প্রতিবাদে আজ (সোমবার) থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। এতে বন্ধ রয়েছে সকল ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা।
কর্মসূচির ফলে কার্যত দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে পড়েছে। সব ধরনের ক্লাস বন্ধের পাশাপাশি সব পরীক্ষা বর্জন করেছেন তারা। মিডটার্ম, ফাইনাল ও ভর্তি পরীক্ষাসহ কোনো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। এমনকি বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগারও বন্ধ। সেই সঙ্গে কর্মসূচি চলাকালে একাডেমিক কমিটি, সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি এবং প্রশ্নপত্র সমন্বয় সভাও অনুষ্ঠিত হবে না।
রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মবিরতি কর্মসূচির ঘোষণা দেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া।
সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. আখতারুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের দাবি- প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন করতে হবে। আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি, শুধু প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন বাতিল। এসব দাবি আদায়ে রোববার পূর্ণদিবস কর্মবিরতির পাশাপাশি অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশও করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।
এদিকে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম বলেন, আমরা এই আন্দোলন নিজেদের জন্য করছি না। বরং আগামী প্রজন্মের জন্য করছি। দেশে এতো দুর্নীতির কথা আমরা শুনি। সেসব কী শিক্ষকরা করেছে? তাহলে কেন তাদের সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। এই প্রত্যয় স্কিম বৈষম্যমূলক।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চ সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে ‘প্রত্যয় স্কিম’ এ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ব্যবস্থাকে একটি বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা বলে শুরু করেই বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনগুলো।
দাবি আদায়ে কিছু কর্মসূচি পালনের পর গত ৪ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা। এরপরও দাবির বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত ২৫,২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। পরে ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়।