সৈয়দ ময়নুল ইসলাম রবিন, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার সদর উপজেলাধিন ‘উত্তরমুলাইম মল্লিক সরাই ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দাখিল উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশংসাপত্রের নামে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। যেখানে ২০ থেকে ২৫ টাকা খরচে তৈরি প্রশংসাপত্রের বিপরীত শিক্ষার্থী প্রতি আদায় করা হচ্ছে ৫০০ টাকা।
জানা যায়, দাখিল (এসএসসি) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুবাদে নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে মার্কশিট ও প্রশংসাপত্র নেয়ার নির্দেশ রয়েছে। সেক্ষেত্রে তারা নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে সেগুলো উত্তোলন করতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী, দাখিল বা এসএসসি বোর্ড পরীক্ষার আগে আবেদনফরম পূরণ করা হয়। ফরম পূরণের তথ্য অনুযায়ী বোর্ড ফি’র মধ্যে মূল সনদ এবং ট্রান্সক্রিপ্ট (মার্কশিট) বাবদ ফি যা বোর্ড ফি’র সঙ্গে ফরম পূরণের সময়েই আদায় হয়। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানে ধনী-গরীব বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের সন্তানরা লেখাপড়া করে। তাদের কাছ থেকে প্রশংসাপত্রের জন্য অতিরিক্ত ফি নির্ধারণ করে টাকা আদায়ের কোন বিধান নেই।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মাদরাসা অধ্যক্ষের নির্দেশে অফিস সহকারি প্রশংসা পত্র দেয়ার সময় জন প্রতি ৫০০ টাকা করে আদায় করছেন। ওই টাকা না দিলে প্রশংসাপত্র নিতে পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। প্রকাশ্যে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দাখিল উত্তীর্ণ এক শিক্ষার্থী বলেন, একদিকে এইচএসসি তে ভর্তির ফি যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, তারমধ্যে আবার প্রশংসাপত্রের জন্য গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা। মাদরাসার এই নিয়ম পরিবর্তন হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবো।
এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুস সামাদ মিয়া বলেন, প্রশংসাপত্রের নামে ছাত্রদের কাছ থেকে ৫০ টাকা নেয়ারও বিধান নেই। দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানে পড়েছে সেজন্য সম্পর্কের ভিত্তিতে দিলে সেটা আলাদা বিষয়। মূল মার্কশিট ও সনদপত্র বাবদ কোন টাকা আদায় হবে না, যেহেতু দাখিল পরীক্ষার আগে সকল ফি বোর্ড কেটে রেখে দেয়। তিনি আরো বলেন, আমি এই বিষয়ে প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলবো কিভাবে বাচ্চাদের কাছ থেকে টাকা রাখেন।
মাদরাসা অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ শামসুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বাবাদ ৫০০ টাকা নেই। গরীব ছাত্রদের কাছ থেকে কম করে নেয়া হয়।
প্রশংসাপত্র বিতরণের সময় ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত, এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি উক্ত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ শামসুল ইসলাম।