আবু তাহের বাপ্পা : রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত উইলস লিটল স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ.ন, ম. সামসুল আলমের বিরুদ্ধে দূর্নীতি, স্বজন প্রীতি, জাল জালিয়াতির বহুমাত্রিক অভিযোগের পরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। ক্ষমতার চরম অপব্যবহারের মাধ্যমে সদ্যবিদায়ী আওয়ামীলীগের সময়ে পদ দখলে নিয়ে প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকা তসরুপের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে শেষ পর্যন্ত মামলা হয়েছে । কিন্তু কোন কিছুতেই কিছু হয় না তার।
জানা গেছে, ছাত্র জনতার রুদ্ররোষে পড়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর প্রতিষ্ঠানের চলতি এডহক কমিটি গত ০৭/০৮/২০২৪ইং তারিখে তাকে বরখাস্ত করে। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য ক্ষমতার বলে তিনি এখনো ক্ষমতার চেয়ার দখল বসে আছে। এ দিকে দূর্নীতিসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে কোন প্রকার কথা বলতে নারাজ সামসুল আলম। তিনি কোন গণমাধ্যম কর্মির ফোন রিসিভ করেন না।
আ.ন, ম. সামসুল আলমের নানা অপকৃতি বিষয়ে গত ১৭/ ০৭/২০২৩ তারিখে মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট আদালত-২ এ একটি মামলা দায়ের করেন যোদ্ধা মোঃ আজের আলী সরকার । মামলা নং সিআর ৪৪৩/২৩ (রমনা) ঢাকা।
জানা যায়, সে মামলাকে প্রভাব খাটিয়ে দোয় মুক্তি নিয়ে আসেন আ.ন, ম. সামসুল আলম। কিন্তু সে দায়মুক্তির পর যে বাদী পক্ষ মামলাটি নারাজী দিয়েছে সে সতস্যটি প্রকাশ করছে না আসামী পক্ষ। তারা শুধু প্রচার করছে মামলা শেষ।
জানা যায়, নিয়োগ ও এমপ্রিভ’ক্তি থেকে শুরু করে সাধারণ শিক্ষক থেকে প্রভাষক হওয়ার সব ধাপে সামসুল আলম দেশের কোন নিয়মই মানেন নাই। বরং ভূয়া জাল জালিয়াতির কাগজ থেকে তিনি নিজের নিয়োগ নিয়েছেন। অভিযোগে বলা হচ্ছে প্রভাষক পদে নিয়োগের সময় তিনি নিজের নাম্বার সিটে ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে নিজেই স্বাক্ষর করেছেন।
ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তিনি ক্যাম্পাসে গড়ে তুলেছেন একটি বিশেষ ক্যাডার বাহিনী। যাদের অনেককেই নানা অনৈতিক সুযোগ দিয়ে তিনি ক্ষমতা ধরে রাখেন। ক্ষমতা চর্চার সে মোহড়ায় একজন ছাত্রকে পিটিয়ে মারাত্বক জখমের ঘটনার মামলায় আসামী হন তিনি। একাধিক সূত্র বলছে প্রতিষ্ঠানটিকে নানাভাবে গিলে খাচ্ছে এই সামসুল আলম।
জানা গেছে, নিজ ক্যাডার বাহিনীকে নানা সুযোগ দিতে গিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠানের ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা তসরুফ করেছেন। হাত ঘুরে এ সব টাকার বড় অংশই গেছে তার পকেটে।
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে সামসুল আলম জাতীয় অর্থনীতিকে বলেন, আমাকে সরানো হয়েছিল। কিন্তু চেয়ার ম্যান মহোদয় পরে নিজেই আবার সে আদেশ তুলে নিয়েছেন। আদালতে যে মামলা হয়েছিল তাও শেষ হয়ে গেছে । এ নিয়ে নতুন করে কথা বলার কিছু নেই। তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরাতে তারা এখন প্রেসনে একজন আর্মি কর্মকর্তাকে বসানোর কথা ভাবছে। সব মিলে ক্ষমতার কেন্দ্রে এখনো অটল শত অভিযোগ থাকা সামসুল আলম।
শিক্ষিকা নাজমা হোসেন লাকি জাতীয় অর্থনীতি কে বলেন, এ ভারপ্রাপ্ত প্রভাষক সামসুল আলম অনিয়ম ও দুর্নীতি করেই এখানে এখনো টিকে আছেন। আওয়ামী লীগের ক্ষমতা বলে তিনি তিন মাসের কথা বলে দীর্ঘ সময় জোর করে চেয়ারে বসে আছেন। তার কাছে অনিয়ম-ই নিয়মে পরিণত হয়েছে। এমন কোন কাজ নেই যা তিনি করেননি। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন তিনি। তাই তাকে অতি দ্রুত সরিয়ে যোগ্য ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনবে এমনটাই আশা করেন তিনি।