থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে আনুষ্ঠানিক নিয়োগ দিলেন দেশটির রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন। নির্বাচনে জয়লাভ করার দুদিন পর রবিবার (১৮ আগস্ট) দেশটির সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন ৩৭ বছর বয়সী পেতংতার্ন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
তিনি থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ধনকুবের থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে। এর আগে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পার্লামেন্ট।
সোমবার (১৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পার্লামেন্ট নির্বাচিত হওয়ার দুদিন পর থাইল্যান্ডের রাজা পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন করেছেন। এরপর থাইল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রোববার শপথ নেন ৩৭ বছর বয়সী পেতংতার্ন।
এর আগে, পেতংতার্নের ফুফু ইংলাক সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সংবাদমাধ্যম বলছে, গত বুধবার থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্রেথা থাভিসিনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার দু’দিন পর পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। তাদের দুজনেই ফেউ থাই পার্টির নেতা। ২০২৩ সালের নির্বাচনে ফেউ থাই পার্টি দ্বিতীয় হয়েছিল এবং ক্ষমতাসীন জোট গঠন করেছিল।
পেতংতার্ন এখন থাইল্যান্ডের স্থবির অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার মতো কঠিন কাজের মুখোমুখি হয়েছেন। সামরিক অভ্যুত্থান সামাল দেওয়া এবং আদালতের হস্তক্ষেপ এড়িয়ে টিকে থাকাটাও তার জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জের বিষয় হবে। আদালতের হস্তক্ষেপের কারণে তার দলের নেতৃত্বে পূর্ববর্তী চারটি প্রশাসন ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে।
গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা বলেন, ‘আমি সত্যিই আশা করি, আমি মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস পুনঃস্থাপন করে দিতে পারবো– সকল থাই জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে আমরা সুযোগ তৈরি করতে পারি।’
পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে পেতংতার্নের পক্ষে ৩১৯টি ভোট পড়ে। আর বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৪৫টি ভোট। পেতংতার্ন হলেন গত দুই দশকে সিনাওয়াত্রা পরিবার থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়া চতুর্থ ব্যক্তি। অবশ্য তার বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রা ও ফুপু ইংলাক সিনাওয়াত্রাসহ অপর তিনজন সামরিক অভ্যুত্থান বা সাংবিধানিক আদালতের রায়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, থাইল্যান্ডের স্কুল এবং যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন পেতংতার্ন। সিনাওয়াত্রা পরিবারের মালিকানাধীন রেন্ডে হোটেল শিল্প গোষ্ঠীতে কয়েক বছর কাজ করেছেন তিনি। তার স্বামী ওই শিল্প গোষ্ঠীর উপপ্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন।