মুহাম্মদ ওয়াহিদুন নবী বিপ্লব: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকায় মো. সুজন নামে এক ট্রাকচালক নিহতের মামলায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে ইনুকে সাত দিনের রিমান্ড শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাকে হাজতখানায় রাখা হয়। ৪টা ৪ মিনিটে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সবুজ রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখান মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী-আল-ফারাবী। এরপর অপর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমানের আদালতে তার ১০ দিনের রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে রাষ্ট্র পক্ষে অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী সেলিম রিমান্ডের আবেদন বাতিল পূর্বক জামিনের আবেদন করেন।শুনানিতে তিনি দাবী করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যৌক্তিক ছিল বলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছিলেন হাসানুল হক ইনু। আন্দোলন চলাকালে গত ১৫ জুলাই তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানান, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন যৌক্তিক। তিনি আন্দোলনের দাবি-দাওয়া মেনে নিতে শেখ হাসিনাকে অনুরোধও করেন। এক পর্যায়ে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা হই হুল্লোড় শুরু করলে বিচারক তাদের প্রশ্ন করেন, আপনারা কি শুনানি করতে দেবেন কি না?। এরপরও বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা না থামায় বিচারক দ্রুত জামিনের আবেদন নাকচ করে রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ২৬ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে ইনুকে গ্রেফতার করে ডিবির একটি টিম। পরদিন ২৭ আগস্ট তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষমাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২০ জুলাই সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর থানার বছিলা রোডে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের পাশে আসামিদের সরাসরি নির্দেশনায়, পরিকল্পনায় এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে হামলা চালানো হয়। হত্যার উদ্দেশ্যে নিরাপরাধ শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর গুলি বর্ষণ করে। নিহত সুজন পেশায় একজন ট্রাকচালক ছিলেন। ঘটনার দিন সুজন মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের লাউতলা এলাকায় তার ট্রাক গ্যারেজে রেখে বাড়ি ফেরার সময় তাকে গুলি করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট নিহতের ভাই মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন । মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭৯ জনকে আসামি করা হয়।