মোঃ ওসমান গনি ইলি,কক্সবাজার: কক্সবাজারে নানা কৌশলে ছড়িয়ে পড়েছে রোহিঙ্গারা। তাদের অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি ও দালালদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে জাতীয়তা সনদ হাতিয়ে নিয়েছে। তাই রোহিঙ্গা ভোটার, জড়িত জনপ্রতিনিধি ও দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন।
তিনি আরও বলেন, নতুন ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে। এতে কক্সবাজার জেলার কোথাও রোহিঙ্গারা আর ভোটার হওয়ার সুযোগ পাবে না। নির্বাচন কমিশনের কঠিন ও বাস্তবমূখি অনলাইন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ছাড়া এখন কেউ আবেদন পর্যন্ত করতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমরা সুষ্ঠু শান্তিতে এবং বাংলাদেশের কোন নাগরিক যাতে কোন সেবা নিয়ে ভোগান্তিতে না পড়েন সেই ভাবে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। যাতে কোন ব্যক্তি ভোটার এবং জন্মনিবন্ধন করতে হয়রানি না হয়। আর দালালমুক্ত নিঃসন্দেহে পরিবারের সদ্য জন্ম নেওয়া সন্তানের জন্ম নিবন্ধন নিয়ে যেন হয়রানির শীকার হতে না হয় সেইভাবে আমরা কাজ করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। উপজেলা পর্যায়ে এবিষয়গুলো যেন আরোও সহজতর করা হয় সেই উপলক্ষে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্ন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, দালালের মাধ্যমে যেন কক্সবাজার জেলায় কোন রোহিঙ্গা আর ভোটার করাতে না পারে সেই বিষয়ে খুবই গুরুত্বসহকারে তদারকি করছেন। যদি কোন দায়িত্ববান কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি রোহিঙ্গা ভোটারে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি আইনী পদক্ষেপসহ সকল ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তিনি কক্সবাজার থেকে সকল উপজেলা কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপস্থিতিতে এই মতবিনিময় সভায় নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সভায় জানানো হয়, নতুন ভোটার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সহজিকরণের উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশন নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পদক্ষেপগুলো হলো- এসএসসি/সমমান বা তদুর্ধ্ব সনদ না থাকলে, এসএসসি/সমমান বা তদুর্ধ্ব অনলাইন সনদ। ভেরিফাইয়েবল QR কোডযুক্ত অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ। ভেরিফাইয়েবল QR কোডযুক্ত অনলাইন নাগরিকত্ব সনদ। বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র উল্লেখ্য, সরকারী চাকরিজীবীর সন্তান “A” ক্যাটাগরিভূক্ত হবে। এক্ষেত্রে সরকারী চাকরির প্রমাণস্বরূপ অফিস প্রধান কর্তৃক সত্যায়িত সার্ভিস বহির কপি, নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র প্রদান করতে হবে।
এছাড়া এসএসসি/সমমান বা তদুর্ধ্ব সনদ না থাকলে, ভেরিফাইয়েবল QR কোডযুক্ত অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ। ভেরিফাইয়েবল QR কোডযুক্ত অনলাইন নাগরিকত্ব সনদ। বাবা-মায়ের AFIS যাচাই (আঙ্গুলের ফিংগার যাচাই রিপোর্ট)। স্থায়ী বাসিন্দা সনদ (জেলা প্রশাসন বা তার প্রতিনিধি কর্তৃক প্রদত্ত)। ভূমিহীন সনদ, অনলাইন ভেরিফাইয়েবল ভূমি উন্নয়ন করপ্রদানের রশিদ/পর্চা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)। পাসপোর্টের কপি (যদি থাকে)। ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি থাকে)
উল্লেখ্য, বাবা-মায়ের মধ্যে একজন বেঁচে থাকলে এবং তিনি ভোটার হয়ে থাকলে তার AFIS যাচাই (আঙ্গুলের ফিংগার যাচাই রিপোর্ট এবং অন্যজনের অনলাইন মৃত্যু সনদ দাখিল করতে হবে। আর বাবা-মা কেউ বেঁচে না থাকলে উভয়ের অনলাইন মৃত্যু সনদ দাখিল করতে হবে। তাছাড়া যে সকল বাসিন্দা ভোটার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ক্যাটগরি “A” এবং ক্যাটগরি “B” এর আওতায় পড়বে না, তাদের ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম উপজেলাভিত্তিক গঠিত বিশেষ কমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে।
এসময় সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফয়সাল আলম, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন বাহারিসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।