শেখ নিয়াজ মোহাম্মদ মুন্না: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নবজাতক চুরি করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মডার্ণ ডায়গস্টিক ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে । এ ঘটনায় সালমা বেগম নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে নবজাতকের মা আকলিমা বেগম রাজিয়া বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে গত ১৪ অক্টোবর দুপুর দেড়টার দিকে ওই ক্লিনিকে ছেলে নবজাতক ভূমিষ্ট হয়। এরপর ওই বাচ্চাটি আয়ার মাধ্যমে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের বিনিময়ে নবজাতকে বিক্রি করে দেয়।
অভিযোগ থেকে জানাযায়, রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ থানার দৌলদিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আকলিমা বেগম রাজিয়া। তিনি দৌলদিয়ায় বসবাস করার সুবাদে ওই এলাকায় যৌনকর্মী লক্ষীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে লক্ষীর সঙ্গে রাজিয়ার সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে।
রাজিয়ার গর্ভে সন্তান আসার পর থেকে তার স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়। তার গর্ভের সন্তানের ভরণ পোষন দেবে না বলে হুমকি দেয় তার স্বামী মিজান। এবিষয়ে রাজবাড়ী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। রাজিয়ার বাচ্চা ভূমিষ্ট হওয়ার সময় হলে তার শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। গত ৩ এ অক্টোবর লক্ষী তাকে ফরিদপুর হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর কথা বলে বাসা থেকে নিয়ে আসে।
পরে তাকে অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছে রেখে লক্ষী আত্মগোপনে চলে যায়। ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি তাকে পরদিন সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে মডাণ ডায়গস্টিক ও ক্লিনিকে ভর্তি করে। পরে ১২দিন ক্লিনিকে আটকে রাখার পর গত ১৪ অক্টোবর সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ওই ক্লিনিকে তাকে জোরপূর্বক সিজার করানো হয়।
সিজারে তার ছেলে সন্তান ভূমিষ্ট হয় তার জ্ঞান ফেরার পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে জানিয়েছে তার সন্তান অসুস্থ্য। তাই আইসিইউতে ভর্তি রাখা হয়েছে বলে সময় পার করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে বাচ্চা বিক্রি করে দিয়েছি বলে জানায়।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, মডার্ণ ডায়গস্টিক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে। সরকারী হাসপাতাল থেকে জোরপূর্বক রোগীদের এ ক্লিনিকে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা ও সিজার করানো হয়। এর আগেও এ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে বাচ্চা চুরি করে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
নবজাতকের মা রাজিয়া আক্তার জানান, প্রতারণার মাধ্যমে তাকে এখানে আনা হয়েছে। জোরপূর্বক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিজার করিয়ে বাচ্চা বিক্রি করে দেয়। তার বাচ্চাকে ফেরত পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে মডার্ন ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিকের পরিচালক মো. শহীদ মিয়া বলেন, বাচ্চাটি আয়া চুক্তি করে নিয়েছেন। তবে চুক্তির মাধ্যমে আয়াকে তারা দিতে পারেন কিনা প্রশ্নের জবাবে কোনো উত্তর দেননি তিনি।
সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, বাচ্চা চুরি করে বিক্রির অভিযোগ গ্রহন করা হয়েছে। অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথীভূক্ত করা হবে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।