1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৪ অপরাহ্ন

সুনামগঞ্জে সুরমা ইউনিয়নের অনাস্থাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রেজা বাহিনীর হামলায় মেম্বার আহত

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের অনাস্থাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন রেজা ও তার বাহিনীর হামলায় ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ খুর্শিদ মিয়া (৪২) গুরুতর আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় সুনামগঞ্জ পৌরসভার জেলরোডে,দায়েরকৃত অভিযোগের তদন্ত চলাকালে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জের ধরে চেয়ারম্যান আমির হোসেন রেজা ও তার ভাতিজা তাজুয়ার আফজাল শিহাব এর নেতৃত্বে একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসী এ বর্বরোচিত হামলা করে। ঘটনার পরপরই আশংকাজনক অবস্থায় আহত ইউপি সদস্য খুর্শিদ মিয়াকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুরমা ইউনিয়ন পরিষদ পরিষদের সদস্য ও সদস্যারা জানান, অনাস্থাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমির হোসেন রেজার বিরুদ্ধে সরকারী খাস খতিয়ানের জায়গার মাটি চুরি,ভিজিডি কার্ডগ্রহীতাদের বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপ্রয়োজনীয় বাপপুতের পিআইসির নামে রাষ্ট্রের বরাদ্দের টাকা লুটতরাজসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে ২০ নভেম্বর বুধবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনামুর রহিম বাবর,ইব্রাহিমপুর গ্রামস্থিত অস্থায়ী কার্যালয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। তদন্ত কার্যক্রমে হাজির হয়ে পরিষদের সকল সদস্য সদস্যারা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সাক্ষ্য প্রদান করলে ক্ষুব্ধ আমির হোসেন রেজা ইউপি সদস্যদের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবীসহ তাকে খুন করবেন বলে প্রকাশ্যে হুমকি দেন। উক্ত হুমকির ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের জেলরোডে একা পেয়ে এ হামলার ঘটনা সংঘটিত করেন চেয়ারম্যান রেজা ও তার ভাতিজাসহ ঐ বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। হামলায় লোহার রড দ্বারা উপর্যুপরী বারী মেরে ইউপি সদস্যের দুই পা ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টার পাশাপাশি তার নগদ টাকা ছিনতাই করেছে সন্ত্রাসীরা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার অন্তর্গত সুরমা ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মোঃ ফিরোজ মিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট,জেলা পুলিশ সুপার ও সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবরে দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করেন,আমির হোসেন রেজা একজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা,জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কার্যকরী কমিটির সদস্য, সদর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সেক্রেটারী ও মহকুমা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ছাড়াও একাধিক মামলার আসামী। সুনামগঞ্জ সদর থানার মামলা নং ১৮ (জিআর ১৬৯/২০০৬ইং) তাং ১৯/০৭/২০০৬ইং ধারা ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৪/৩৭৯/৪২৭/৩০৭/৫০৬/৩৪ দ:বি: আইনের মামলায় এজাহারভূক্ত প্রধান আসামী ছিলেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলার পাশাপাশি জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনায় জড়িত ছিলেন তিনি। আমির হোসেন রেজার বিরুদ্ধে সরকারী খাস খতিয়ানের জায়গা হতে ৫ লাখ ঘনফুট মাটি (যাহার মূল্য এক কোটি টাকা) চুরির ঘটনায় সদর উপজেলা ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তা মোঃ নুর আলী বাদী হয়ে জিআর মামলা নং ৪৭/২০২৪ইং (সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার মামলা নং ২০ তাং ১৫/০২/২০২৪ইং) দায়ের করেছেন। উক্ত মামলায় সদর মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রিয়াজ উদ্দিনের দাখিলকৃত অভিযোগপত্র নং ৮৭ তাং ৩১/০৩/২০২৪ইং ধারা ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ইং এর ১২ ও ১৩ ধারা,বিজ্ঞ আদালত গ্রহন করে ঐ মামলাটিকে বিচারের জন্য বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ২০২২ সালের ৫ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দেওয়া আবেদনে ইউপি সদস্যরা উল্লেখ করেন, নির্বাচিত ইউপি সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় না করে ইউনিয়নের সকল প্রকল্পে নিজেই কাজ করছেন। কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপি-২ এর বরাদ্দ ৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা ইউপি সদস্যদের না জানিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন সদস্যরা। এর আগে ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে আরেকটি অভিযোগ দেন সদস্যরা। সেখানে তারা ইউনিয়নের বরাদ্দকৃত ১০টি নলকূপ, ২টি লেট্টিন অনিয়মের মাধ্যমে সদস্যদের না জানিয়ে মনগড়া বিতরণ করেন বলে অভিযোগ করেন। রাস্তার কাজে নিয়োজিত মহিলা কর্মী নিয়োগেও তিনি সদস্যদের না জানিয়ে সুবিধা নিয়ে নিয়োগ দিয়েছেন মর্মে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আলাদা অভিযোগ করেন। গত ২৭ জুলাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আরেকটি লিখিত অভিযোগ করেন ভিজিডির চাল আতœসাতকৃত হতদরিদ্র নারী মলেহা খাতুন। অভিযোগে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান আমির হোসেন রেজা তাকে ১৫ মাসের ভিজিডির চাল কম দিয়েছেন বলে জানান। অভিযোগকারীদের মধ্যে ইউপি সদস্য আব্দুল হাই ও ইউপি সদস্য খোরশিদ মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন রেজা নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই প্রকল্প বণ্ঠনে বৈষম্য করছেন। ইউপি সদস্যদের পাশ কাটিয়ে বরাদ্দ বণ্ঠনের নামে লোপাট করছেন। আমরা তার বিরুদ্ধে সবাই মিলে অনাস্থা দিয়েছি। একাধিক অভিযোগ করেছি উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে। এ ঘটনায় এলাকায় চেয়ারম্যান ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এদিকে অভিযুক্ত আমির হোসেন রেজার কাছে ঘটনার ব্যাপারে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি লাইভ দেখে ঘটনার কথা জানতে পেরেছি। এই মেম্বাররা আমার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ দায়ের ও মামলা করে যাচ্ছে। কিন্তু এগুলো করে তারা আমার কিছুই করতে পারবেনা। সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি মোঃ নাজমুল হক বলেন,আমরা আহত ইউপি সদস্যের অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে অবশ্যই আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি