শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে পৈত্রিক জমি ফিরে পেতে আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন অসহায় আব্দুল খালেক নামের এক কৃষক। জাল ও অনিবন্ধিত দলিল তৈরি করে তাকে হয়রানি এবং জমি দখলের পায়তারা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশি শাহিদ মিয়ার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের মানিকচাঁদ পাড়া গ্রামের মৃত বাবর আলীর ছেলে আব্দুল খালেক বাদলাকুড়া মৌজায় ৪২ খতিয়ানভুক্ত ২৩ নং দাগে তার পিতার ১৯৬৯ সালের ভারত-বাংলাদেশ বিনিময় দলিলমুলে ওয়ারিশ হিসেবে প্রাপ্ত ১ একর ৫ শতাংশ জমির একাংশে ধানচাষ ও দোকান ঘর নির্মান করে ব্যবসা করে আসছেন। এর কিছু অংশ জমি মালিকানা দ্বদ্বে পতিত পড়ে আছে। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে এর কোন সুরাহা না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন আব্দুল খালেকের পরিবার।
এদিকে, প্রতিবেশি মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে শাহিদ মিয়া খালেকের বাবা বাবর আলীর কাছ থেকে ১ একর ৫ শতাংশ জমি বায়নাপত্র ও সাব-রেজিষ্ট্রি দলিলমুলে ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছেন বলে তার দাবি। তবে বাদলাকুড়া মৌজায় জমি থাকলেও তার দলিলে মানিকচাঁদ পাড়া মৌজা উল্লেখ করা হয়েছে। এই জমি নিয়ে মালিকানা দ্বন্দ্বে স্থানীয়ভাবে কয়েক দফায় সালিশি বৈঠক বসলেও কোন সুরাহা না হওয়ায় আব্দুল খালেক আদালতের দারস্থ হন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ওই জমির একাংশে আব্দুল খালেক দোকানঘর নির্মান করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। কিছু অংশ পতিত পড়ে আছে। সেখানে গ্রামবাসী গরু ছাগল চড়াচ্ছেন ও খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
স্থানীয় তুলা মিয়া, আবুল হাশেম ও হোসেন আলী জানান, এই জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে দু’পক্ষের মামলা চলছে। অধিকাংশ জমি আব্দুল খালেকের দখলে আছে। বাকী জমি পতিত পড়ে আছে। এবিষয়ে সুরাহা প্রয়োজন।
ভুক্তভোগী আব্দুল খালেক বলেন, এ জমি আমার বাবার। ওয়ারিশ সুত্রে বর্তমানে আমার ভোগদখলে আছে। আমি গত ৫৯ বছর ধরে এ জমি ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু জাল দলিল ও ভুয়া কাগজ তৈরি করে শাহিদ মিয়া তার নিজের মালিকানা দাবী করে মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানী করছে। আমি কর্তৃপক্ষের কাছে এর সুষ্ঠ সমাধান চাই।
এব্যাপারে শাহিদ মিয়া জানান, আব্দুল খালেকের দাবীকৃত জমি তার বাবা আমার কাছে সাব-রেজিষ্ট্রি ও বায়নাপত্র দলিলে বিক্রি করে দিয়েছে। বর্তমানে সে আমার জমি বেদখল করতে চাচ্ছে। সেও আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। শেরপুর আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, আরএস ও বিআরএস সুত্রে উপজেলার বাদলাকুড়া মৌজায় ৪২ খতিয়ানে ২৩ নং দাগে ১ একর ৫ শতাংশ জমির পুর্বের মালিক ছিলেন ঝাটা রাম হাজং নামের এক ব্যাক্তি। তিনি ভারত চলে যাওয়ায় বর্তমানে ওই জমি ‘খ’ তফসিলের জমি হিসেবে অর্ন্তভুক্ত রয়েছে।