1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৭ অপরাহ্ন

সুনামগঞ্জের হাওর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির ধান

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • আপডেট : শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির ধান। এখন আর হাওরে দেশী জাতের বোর ধান চাষাবাদ হয় না। চাষাবাদ হয় উচ্চ ফলনশীল ধান। দুই যুগ আগেও আগাম বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সুনামগঞ্জ জেলার বৃহৎ বোর ফসলি ধানের হাওর তাহিরপুর উপজেলার শনি, মাটিয়ান, মহালিয়া, বর্ধিতগুরমাসহ ছোট বড় সবগুলো হাওরেই চাষাবাদ হতো দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন জাতের বোর ধান। দেশীয় বোর ধান রোপণের পর তেমন কোন যতœ করতে হতো না। এমনকি সার ও কীটনাশকও দেয়া হতো না। জলবায়ু সহিষ্ণু ছিলো দেশী জাতের সব কয়টি ধান। ফলন একটু কম হলেও অতিবৃষ্টি কিংবা খরাতে তেমন কোন ক্ষতি হতো না। জমিতে সেচ দিতে হত না। বর্তমানে হাইব্রিড আর বহুজাতিক কো¤পানির বাণিজ্যের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে দেশী জাতের বোর ধান। বেশি ফলনের আশায় কৃষকরা ঝুঁকছেন হাইব্রিড ধান চাষাবাদে। খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে স্বয়ংস¤পূর্ণতা ধরে রাখতে সরকারও জোর দিচ্ছেন হাইব্রিড ধান চাষাবাদে। তবে তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তারা কৃষকদের উচ্চ ফলনশীল বীজ ধানের পাশাপাশি দেশী প্রজাতির ধানের বীজ রাখার জন্যও কৃষকদের পরামর্শ দেন। হাওর অঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির ধান যা ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে তার মধ্যে রয়েছে রাতা,গচি শাইল, নাজিশাইল, লাকাই, পানি শাইল, বোর, টেপি, রঙ্গিলা টেপি, রাজাশাইল, বেগুন বিচি, কালো জিরা, বাশফুল ইত্যাদি। একটা সময় অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু জাতের ধানের চাল দিয়ে রান্না করা হতো। খেতেও সুস্বাদু ছিলো সে ধান। স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলেছেন, দেশী জাতের ধানে ফলন কম হওযায় কৃষক এখন আর আগেরে মতো
দেশী ধান চাষাবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। অধিকাংশ হাওরেই এখন চাষাবাদ হচ্ছে ব্রি ধান ২৮,ব্রি ধান ২৯,ব্রি ১২০৩,শক্তি। সরজমিন তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওরে গিয়ে দেখা যায় সে চিত্র। বিস্তৃর্ণ হাওর জুড়ে সবুজের হাতছানি। হাইব্রিড ধানই চাষাবাদ হচ্ছে হাওরের এপাশ থেকে ও পাশ। শনির হাওর পাড়ের ভাটি তাহিরপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন। তিনি জানান, দেশি জাতের ধান চাষের উৎপাদন খরচ কম ছিল। তখন ধান কাটার মৌসুমে গ্রামে পিঠা পায়েস, চিড়া, খই, মুড়ি তৈরির ধুমও ছিল। এখন তা আর হয় না। দেশি জাতের ধান আবাদে অতিরিক্ত সারকীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হত না বলেও তিনি জানান। মাটিয়ান হাওর পাড়ের কৃষক মধ্য তাহিরপুর গ্রামের কৃষক সত্য রায় জানান, দেশী ধান চাষাবাদ করতে কোনো বীজ বাজার থেকে কিনতে হতো না। বীজের জন্য কিছু ধান আলাদা করে ঘরে তুলে রাখলেই চলত। বর্তমানে আমরা যে ধান চাষাবাদ করছি তা বীজ রাখতে পারছি না । বছরে বছরে বাজার থেকে চড়া দামে বীজ কিনতে হচ্ছে। সেই সাথে ধান রোপনের পর জমিতে কীটনাশক,সার,সেচ প্রচুর পরিমান দিতে হচ্ছে। না হলে ফলন ভালো হচ্ছে না। তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, কৃষকরা বেশী লাভের লক্ষে তাদের জমিতে উচ্চ ফলনশীল ধান রোপন করেন। তিনি আরো বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে তারা কৃষকদের বলে দেন উচ্চ ফলনশীল বীজ ধানের পাশাপাশি দেশীয় প্রজাতির বীজ ধানও তারা যেন সংরক্ষণ করে। তিনি বলেন, দেশীয় বীজ ধানের ফলন কম হলেও বাজারে দেশীয় ধানের দাম অনেক বেশী।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি