রাজশাহী প্রতিনিধিঃ- হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালের প্রভাব পড়েনি বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে। রোববার হরতালের দিন রাজশাহীর জীবনযাত্রা স্বাভাবিক দেখা গেছে। কোথাও কোন পিকেটিংয়ের খবরও পাওয়া যায়নি।
তবে দিনের শুরুতেই ভোরে নগরীর আমচত্বর এলাকায় ট্রাক টার্মিনালের ভেতর দুটি বিআরটিসি বাসে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এটি হরতালের নাশকতা কি না তা অবশ্য পুলিশ নিশ্চিত নয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাক টার্মিনালের ভেতর বাস দুটি ৯ মাস ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ভোরে একটি বাসে আগুন লাগে। এতে বাসটির আসনগুলো পুড়ে যায়। এ সময় আগুন পাশের আরেকটি বাসে ছড়িয়ে পড়ে। এতে এই বাসটিরও কিছু আসন পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, এটি হরতালের জন্য করা হয়েছে কিনা তা আমরা সঠিক জানি না। ফায়ার সার্ভিস পৌঁছানোর আগেই আগুনের ধোয়া দেখে টহল পুলিশ সেখানে গেছে। তারা কাউকে সেখানে দেখতে পায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তিনি বলেন যেটা সঠিক সেটা বাহির করার চেষ্টা করছি।
এদিকে রোববার হরতাল থাকলেও শহরে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করেছে। অটোরিকশার যানজট ছিল অন্যান্য দিনের মতোই। বাস চলাচল আগের তুলনায় কিছুটা কম ছিলো। তাছাড়া রাজশাহী বাস টার্মিনাল থেকে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সব বাস সময়মতো ছেড়ে গেছে খোজ খবরে তা জানা গেছে। এদিকে যাত্রীরাও স্বাভাবিকভাবে নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছেন।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, সব রূটের সব বাস সময়মতো ছেড়ে গেছে। কোথাও কোন বাস আটকে দেয়া হয়েছে এমন ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। হেফাজতের ডাকা হরতালকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক ছিলো।
এদিকে হরতাল সামনে রেখে জামাত শিবিরের আট নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শিহাব উদ্দিন (৩২), আসিফ করিম (২০), মো. পারভেজ (১৮), ফারহান ইসরাক (২৭), রফিকুল ইসলাম (২৬), আবদুর রহিম (২০), ইসমাইল হোসেন (২১) এবং রাকিবুল ইসলাম (২১)। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
হরতালের কারণে রোববার সকাল থেকেও নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশের টহল টিমের উপস্থিতি দেখা গেছে। সে কারনে পিকেটিং করতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে হেফাজতে ইসলামের হরতাল ডাকার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে নগর আওয়ামী লীগ। রোববার সকাল ১০টা থেকে নগরীর কুমারপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে সেখান থেকে প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। নগরীর সাহেববাজার প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এরপর সেখানে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার প্রতিবাদ সভা পরিচালনা করেন। এ সময় তারা ঘোষণা দেন- শান্তির এই শহরে নাশকতার সৃষ্টি করা হলে প্রতিরোধ করা হবে। কর্মসূচিতে নগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।