1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৭ অপরাহ্ন

কেন মাদ্রাসার দরিদ্র ছাত্ররা রাস্তায় নামতে বাধ্য ?

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : বুধবার, ৩১ মার্চ, ২০২১

বাংলাদেশে মুুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলাম ও উগ্র মৌলবাদীরা সহিংস কর্মসূচি হাতে নেয় এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম, ব্রাক্ষণবাড়িয়াসহ বেশকিছু জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানায় হামলা চালিয়েছে, জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে থানা। এই ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরে দেশে এক ধরনের উত্তপ্ত পরিস্থিতি চলছে। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনায় এসেছে কারা এসব সহিংসতা করছে?

হেফাজতের ডাকা হরতার কারা বাস্তবায়ন করছে? কারা পুলিশের গাড়িতে আগুন দিচ্ছে? থানা জ্বালিয়ে দিচ্ছে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে বেশকিছু কওমী মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং এর ছাত্রদের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এসব ছাত্ররাই মূলত সহিংস কর্মকাণ্ড বাস্তাবয়ন করেছে। তাদের বোঝানো হয়েছে এই হরতাল বাস্তবায়ন করা তাদের ঈমানী দায়িত্ব এবং ঈমানী দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি তাদের মৃত্যু হয় তাহলে তারা ‘জান্নাতে যাবে’। মোটকথা এসব কমোলমতি ছাত্রদের মগজ ধোলাই করে তাদেরকে দিয়ে সহিংসতা ছড়ানো হচ্ছে, করা হচ্ছে বিপথগামী। যেহেতু এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংয়ের অধিকাংশ ছাত্রই এতিম তাই এসব কাজে যেতে নিষেধ করার কেউ নেই। এ ছাড়া কওমী মাদ্রাসার অন্য যেসব ছাত্র আছে তাদের পরিবারেরও মতাদর্শ এই ধরনের তাই তাদের সন্তানরা হুরুরদের কথামত রাস্তায় নামছে, সহিংসতা করছে।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেকেই এতিম এবং মানুষের দানের টাকায় থাকা-খাওয়া চলে। তাদের ভাষ্য, ’হুরুজররা আমাদের বাপ-মা। হুরুররা আমাদের যা বলেন আমরা তাই করি’। এর বাইরে তেমন কোনো উত্তর তাদের কাছে নেই। অনেকেই জানেই না তারা কেন রাস্তায় নেমেছে, গাড়ি পুড়িয়েছে, রেললাইন উপড়ে ফেলেছে, থানায় অগ্নিসংযোগ করেছে বা এর পেছনের রাজনীতি কি। তারা শুধু জানে হুজুর বলেছেন রাস্তায় নেমে হরতার পালন করতে হবে, গাড়ি ভাঙতে হবে এটা তাদের ঈমানী দায়িত্ব। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো কয়েকজন ছাত্রের কাছে নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা শুধু নাম জানে কিন্তু তিনি কে বা কেন তারা বাংলাদেশের তার সফরের বিরোধীতা করে রাস্তা বন্ধ করছে সেসবের কিছুই তারা জানে না। এ ছাড়া কেউ যদি হরতাল করতে না যায় তাহলে হুজুররা তাদের বেধড়ক পেটাবেন আর এই ভয়েও অনেকে রাস্তায় যাচ্ছে হরতাল করতে। যদিও সাধারণ শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতন বা মারধর বন্ধ হলেও এই নিয়মের বালাই নেই মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মাদ্রসা শিক্ষা এমন একটা পর্যায়ে চলে যাচ্ছে বিশেষ করে কওমী মাদ্রাসগুলোর অবস্থা আরও ভয়াবহ। তাদের মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। এ ছাড়া এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংগুলো চলে মানুষের দানের টাকায় এরং এসব ছাত্ররা এতিম তাই হুজুররা যা বলছেন তাই তাদের কাছে ঈমানী দায়িত্ব মনে হচ্ছে। কিন্তু তাদেরকে দিয়ে সহিংসতা করানো কোনোভাবেই শিক্ষকদের কর্তব্য হতে পারে না। শিক্ষক হচ্ছে জাতির বিবেক আর সেই শিক্ষক যদি তার ছাত্রদের সহিংসতা শেখান তাহলে সেই শিক্ষা জাতির জন্য বড় হুমকি। এ ছাড়া সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দল, হেফাজত এবং মৌলবাদীরা বুঝে ফেলেছে যে এতিমখানার এসব ছাত্রদেরকে দিয়ে দেশে যেকোনো ধরনের সহিংসতা করা সম্ভব। আর এ কারণেই তারা এতো কঠোর বার্তা দিচ্ছে এবং সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্ঠা করছে।

এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা বলছেন,  এখন দুইটি কাজ সরকারের অবশ্যই করা দরকার। প্রথমত মাদ্রসা শিক্ষাকে মূলধারার শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করা এবং সাধারণ শিক্ষা দেয়া। দ্বিতীয়ত হচ্ছে এখনই মৌলবাদীদের কঠোর হস্তে দমন করা তা না হলে দেশের উগ্র মৌলবাদ ও ধর্মীয় রাজনীতি উত্থান হবে যা বাংলাদেশের জন্য অশনি সংকেত। আর এর ফলে বাংলাদেশের যত অর্জন সব বিফলে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সূত্র : বাংলা ইনসাইডার

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি