যারা নিজের স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করে, ফতোয়া দেয়, গরম গরম বক্তব্য দেয়, অথচ নিজের জীবন ইসলাম সম্মতভাবে পরিচালনা করে না- এ ধরনের নষ্ট ও ভণ্ড নেতৃত্বকে বর্জন করার জন্য মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্রদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার (৪ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।
তিনি বলেন, উত্তেজিত জনতা যখন মামুনুল হককে আটক করেছে তখন তিনি আল্লাহর কসম খেয়ে বলছেন, ওই নারী তার স্ত্রী, অপরদিকে বিবাহিত স্ত্রীকে কল দিয়ে তিনি বলছেন, ‘তুমি কিছু মনে করো না, আমি পরিস্থিতির কারণে বলেছি। এ ঘটনাগুলো হেফাজতে ইসলামের নেতাদেরও যারা এদের সমর্থন করেন তাদের কেমন লাগছে জানি না। তবে আমার ভিশন লজ্জা হচ্ছে। আসলে এসব নেতারা মামুনুল হকসহ যারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে অপচেষ্টা চালিয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যে তাণ্ডব চালিয়েছে। তাদের নেতৃত্ব নষ্ট ও ভণ্ড এটিরই প্রমাণ হচ্ছে গতকালকের ঘটনার প্রবাহ।
তিনি বলেন, আমি এজন্য মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানাবো এসব নষ্ট ও ভণ্ড নেতৃত্বকে বর্জন করার জন্য। মামুনুল হকরা ইসলামের লেবাস পড়ে আসলে কি করছেন সেটিই গতকালকে বেরিয়ে পড়েছে তাকে আটক করার পরিপ্রেক্ষিতে। ইসলাম কখনো এগুলো অনুমোদন করে না। মামুনুল হক বলেছেন তিনি রিলাক্স করতে গেছেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনার মধ্যে যখন সবাই ঘরবন্দি তখন তিনি বিলাসবহুল রিসোর্টে গেছেন রিলাক্স করতে। এরা যে ইসলামকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে এবং ভণ্ড লেবাস ধরে, সেটার প্রমাণ হলো গতকালকের ঘটনার প্রবাহ। যিনি নিজেকে আলেম হিসেবে পরিচয় দেন তিনি এ ধরনের কাজ করছেন। ইসলাম তো এগুলো অনুমোদন করে না। আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, ওই নারী তার স্ত্রী নন। বৈধ স্ত্রী হিসেবে কোনো কাগজপত্র তার কাছে নেই। তাহলে কি দাঁড়ায়, তাই অনুরোধ জানাবো এ নষ্ট ও ভণ্ড নেতৃত্বকে বর্জন করার জন্য। আমি একজন দেশের নাগরিক ও মুসলমান হিসেবে যারা
নরেন্দ্র মোদীর আগমন নিয়ে আন্দোলনের বিষয় উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, মামুনুল হককে আটক করার পর মসজিদের মাইক ব্যবহার করে তাকে উদ্ধার করার জন্য আহবান জানানো হয়েছে। প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে, একজন অবিবাহিতা নারীকে নিয়ে রিসোর্টে গিয়ে রিলাক্স করতে যাওয়া ব্যক্তির জন্য মসজিদের মাইক ব্যবহার করা মানে ইসলামের ওপর কালিমা লেপন করা।
‘এখানে আরো একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যখন হেফাজতের ব্যানারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আগুন দেওয়া হচ্ছে, ঘরবাড়ি জ্বালানো হচ্ছে, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে, তখন নিপুন রায় কল করে কর্মীদের বাসে আগুন দেওয়ার জন্য বলেন। আর বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যখন সেটাতে সমর্থন দেন, তখন বুঝতে হবে। এটা ইসলাম রক্ষা নয়, হেফাজতও নয় এটি হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। আসলে বিষয়টা ইসলাম নয়, নরেন্দ্র মোদীর আগমনও নয়, ইসলামকে হেফাজত করতেও নয় বরং ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হাসিল করা। পাশাপাশি দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। ’