লকডাউনে রাস্তায় নেমে এসেছে শ্রমজীবি মানুষেরা, এদের মধ্যে অনেকেই নদীভাঙনের শিকার হয়ে ঢাকায় এসেছেন। কারও আবাদি জমি নেই, তাই কাজের সন্ধানে এসছে রাজধানীতে। কেউ বা এসেছেন একটু উন্নত জীবনের আশায়। সবাই ভোর না হতেই কাজের আশায় জড়ো হয়েছেন সিয়া মসজিদ এলাকায়।
বাশঁবাড়ি বস্তির সখিনা বলেন, সরকার লকডাউন দিয়েছে বড়লোকের জীবন বাচাঁতে। কিন্তু আমাদের খাদ্যের সংস্থান করেননি। আমরা গতর খেটে জীবন চালাই আর সেই আমাদের কথা ভাবলো না সরকার? তিনি বলেন ঘরে থাকলেতো মুখে হাত উঠবে না, তাই কাজের সন্ধানে চলে এসেছি। যদি কেউ ঘরের কিংবা রাজমিস্ত্রীর জোগালির কাজে নেয় সেই আশায়।
রাবেয়া বেগম বাড়ী শেরপুরের গোয়ালাবাড়ি, তিনি থাকেন মোহম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় । সকালেই চলে এসেছেন মোহম্মদপুর সিয়ামসজিদ এলাকায় কাজের সন্ধানে। জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে ইট ভাঙা, নির্মাণকাজ, রাজমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রির সহকারী, কাঠমিস্ত্রি, বস্তা টানা, মাটি কাটা, ড্রেন পরিষ্কার থেকে শুরু করে এমন কোনো কাজ নেই, যা তাঁরা করেন না।
কিন্তু আজ কাজ করতে না পারলে সন্তান স্বামীসহ সবাইকে উপোবাস থাকতে হবে, তাই বসে আছি যদি কারোর দয়া হয় চাল-ডাল দেয় সেই আশায়। তিনি বলেন শুনেছি দেশে চলছে সাত দিনের লকডাউন। করোনা সংক্রমণ রোধে এ লকডাউন ডাকা হলেও আমরা বাচঁবো কিভাবে তার ব্যবস্থা করা হয়নি!
পেশায় রিক্সা চালক লোকমান আলী, থাকেন ফার্মগেট তেজকুনিপাড়া জানান, লকডাউনে রিক্সা না চালালে খামু কি? তাই মহল্লার ভিতরেই লোক আনা নেওয়া করছি আফা। প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানালেন সকাল থেকে ৩০০ টাকা আয় করেছেন, দেখা যাক পুলিশ বাধা দিলে ঘরে ফিরে যামু চালডাল কিনা। তিনি বলেন, লকডাউনে ঘরে বসে থাকলে পরিবার নিয়ে কী খামু। কাজের সন্ধানে ঘর থেকে বের হয়েছি। আমাদের মতো দিন আনি-দিন খাওয়া মানুষদের লকডাউনে পরতে হয় মহাবিপদে। কর্ম আর খাবারের সন্ধানে ঘর থেকে বের হয়েছি।
আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষদের লকডাউন মেনে চলা খুব কঠিন। ঘরে শুয়ে বসে দিন পার করাও কঠিন। পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে তো হবে। রহিম শেখ বাড়ী ফরিদপুর , তিনি থাকেন রেলকলোনী বস্তিতে জানালেন, লকডাউনে মানুষজন ঘর থেকে বেরোচ্ছে কম। আমি গরিব মানুষ, দিন আনি-দিন খাই। কাজ না করলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হবে।