এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
এ কেন্দ্রটি স্থাপনে জনগনের বিপুল পরিমাণ জমি সরকার অধিগ্রহন করে এস আলমের কাছে হস্তান্তর করে। প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যায় এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ এখন শুরু হয়নি। ৫ বছর আগে চুক্তি সম্পাদিত হলেও কোন অগ্রগতি নেই। এই প্রকল্পের ভূমি বিরোধ নিয়ে শুরুতে সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হন। ভূমির মালিকরা বলছেন, তারা তাদের জমির ন্যায্য মূল্য পায় নি । স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃত্বে বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্বার্থে এবং এস আলম গ্রুপের বানিজ্যিক উদ্দেশ্য সাধোলে ক্ষুব্ধ জনগনকে নিবৃত্ত করেন। স্থানীয় জনগনের অভিযোগ এখানে বিদুৎ উৎপাদিত হবে না। মুল্যবান বিশাল এ জমি এস আলম গ্রুপের পেটে প্রবেশের নামান্তর। নাম মাত্র কিছু শ্রমিক কর্মচারী নিয়োগ দিলেও তাদের বেতন ভাতা দীর্ঘদিন যাবৎ পড়ে আছে।
তারই প্রেক্ষিতে অদ্য ১৭ এপ্রিল শনিবার সকালে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেতন ভাতা সংক্রান্ত দাবি আদায়ে বিক্ষোভ থেকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে । আর এই বিক্ষোপ পুলিশ- শ্রমিক সংঘর্ষ সংঘটিত হয়।
পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন-
আহমদ রেজা (১৮), রনি হোসেন (২২), শুভ (২৪), মো. রাহাত (২৪) ও মো. রায়হান (২৫)। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ৪ জন বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও একজন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
এ ঘটনায় আহত ১১ জনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন- হাবিব উল্লাহ (২১), মো. রাহাত (৩০), মিজান (২২), মো. মুরাদ (২৫), মো. শাকিল (২৩), মো. কামরুল (২৬), মাসুম আহমদ (২৪), আমিনুল হক (২৫), মো. দিদার (২৩), ওমর (২০) ও অভি (২২)।
এছাড়া গণ্ডামারা পুলিশ ফাঁড়ির তিন সদস্যও আহত হয়েছেন। তারা হলেন-ইয়াসির (২৪), আব্দুল কবির ও (২৬), আসাদুজ্জামান (২৩)।
বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি।
এসময় অনেকে আহত হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতর বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আগুন ধরিয়ে দেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। ৪টি মরদেহ বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. শফিউর রহমান মজুমদার। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শীলব্রত বড়ুয়া জানান, বাঁশখালীর বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ও আহতদের হাসপাতালে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে মো. রায়হান (২৫) মারা যান। তিনি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার আদর্শ গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে।
এ বিষয়ে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান এস আলম মাসুদকে ফোন করা হলে, তিনি কোনো জাবাব দেন নি । এ গ্রুপের অনেক কেই ফোন দেয়া হয় । কেউই কোন জবাব দেয় নি । বাঁশখালীর নানা পুলিশ শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রন করতে হিমসিম খায় ।