1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৮ অপরাহ্ন

হুইপ সামশুলের রাজ্যে ভালো নেই কোন নেতাকর্মীও , মতের অমিল হলেই শুরু হয় হামলা-মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১

হুইপ ও তাঁর ছেলে নাজমুল হক চৌধুরী শারুনের অপকর্মের প্রতিবাদ কিংবা মতের অমিল হলেই শুরু হয় বাপ-ছেলের ক্যাডার বাহিনীর নির্যাতন। দেয় মামলা। প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা থেকে শুরু করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী—কেউ বাদ পড়ছেন না তাঁদের রোষানল থেকে। এমনকি তাঁদের মামলা-জাল থেকে বাদ পড়েনি গৃহকর্মীও।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম নবী বলেন, ‘সামশুল হক ও তার ছেলে শারুন পটিয়ায় আওয়ামী লীগ নিধন যজ্ঞ শুরু করেছে। প্রতিনিয়তই তাদের হামলা ও মামলার শিকার হচ্ছেন আওয়ামী লীগ পরিবারের কেউ না কেউ। তাদের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় আমাকে মোবাইল ফোন চুরির মামলা দিয়েছে। শারুন একাধিকবার নাজেহাল করেছে।’

পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন বলেন, ‘২০১৬ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলরকে কেন্দ্র করে সামশুল হকের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে তার দেওয়া মামলা ও হামলায় জর্জরিত আমি ও আমার পরিবার। শুধু আমার পরিবার নয়, পটিয়ায় যারাই তার মতের বিরুদ্ধে গেছে, তাদের মামলা-হামলা দিয়ে হয়রানি করছে। প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা থেকে শুরু করে ছাত্রলীগ নেতা—কেউই বাদ যাচ্ছে না তাদের রোষানল থেকে।’

পটিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জমির উদ্দিন বলেন, ‘সামশুল হক জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান এবং এমপি নির্বাচনের জন্য মাঠ গোছানো—সব ক্ষেত্রে সামনে থেকে কাজ করেছি। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর মতের অমিল হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেওয়া শুরু করেছে। এরই মধ্যে আমার বিরুদ্ধে ২৭টি মামলা দিয়েছে। আমার তিন ভাই, চার ভাইপো, দুই ভাগ্নের বিরুদ্ধেও মামলা দিয়েছে। হুইপের রোষানল থেকে বাদ যায়নি আমার ঘরের চার গৃহকর্মী ও অটোরিকশার দুই চালকও।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, পটিয়া আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর নিজস্ব বলয় তৈরি করতে মনোনিবেশ করেন সামশুল হক চৌধুরী। এ সময় আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের পরিবর্তে বিএনপি-জামায়াত থেকে নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করতে থাকেন সামশুল হক। তাঁর এ কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করেন আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে মামলা ও হামলার পথ অনুসরণ শুরু করেন সামশুল, যার মধ্যে গত পাঁচ বছরে হুইপ সামশুল হক ও তাঁর ছেলে নাজমুল হক চৌধুরী শারুন বাহিনীর হাতে হামলা ও মামলার শিকার হয়েছে শত শত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী। তাঁদের অনেকে আবার জীবন বাঁচাতে আজ এলাকা ছাড়া।

সামশুল হক ও তাঁর ছেলে শারুনের মামলার শিকার হয়েছেন দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহমুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিনও। তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়া হয় নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা। পটিয়া উপজেলা কৃষক লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু ছৈয়দ, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য সাইফুল ইসলাম সাইফু, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জামসেদ হিরু, পটিয়া পৌরসভার ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মীর আবদুল আউয়ালের বিরুদ্ধে দেওয়া হয় গাড়ি ভাঙচুর মামলা। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের আলম ও অর্থ সম্পাদক মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে দেওয়া হয় গাড়ি ভাঙচুর ও মারামারি মামলা। পটিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সাইফুর আজমের বিরুদ্ধে দেওয়া হয় জ্বালাও-পোড়াও মামলা। ভাঙচুর ও অপহরণ মামলা দেওয়া হয় পটিয়া পৌরসভা জাতীয় শ্রমিক লীগের সহসভাপতি সাইফু উদ্দিন ভোলার বিরুদ্ধে।

হুইপ ও তাঁর ছেলের মামলা থেকে বাদ যাননি প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বজল আহমদ, মো. ইসহাক, পটিয়া আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ কামাল, রবিউল হোসেন আপেল, মো ওবাইদুল্লাহ, পৌর আওয়ামী লীগের নেতা নোমান সরওয়ার দুলাল। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ঘায়েল করতে মামলা দেওয়া হয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যদের নামেও। এমন  ভুক্তভোগী পরিবারের মধ্যে রয়েছে পটিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জমির উদ্দিনের পরিবার।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি