চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গুলি করে অন্তত ৫ শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে এবং কর্মহীন হকারদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তার দাবিতে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন আজ ২২ এপ্রিল ২০২১, বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠনের উপদেষ্টা শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার বলেন, চলমান লকডাউন পরিস্থিতিতে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের উপর যে সীমাহীন জুলুম-বঞ্চনা চালানো হচ্ছে এ দেশের মানুষ ক্ষমতাসীন সরকারকে তার উপযুক্ত জবাব দেবে। তিনি বলেন, দৈনিকভিত্তিতে রোজগার করা মানুষ কর্মহীন হয়ে অভুক্ত দিন কাটাচ্ছে। সরকার করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় যে লকডাউন চাপিয়ে দিয়েছে তাতে শ্রমজীবী মানুষের ন্যূনতম খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করার দায়িত্ববোধ করছে না। কারখানা খোলা রাখা হয়েছে অথচ শ্রমিকদের যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। অন্যদিকে বকেয়া পাওনা ও ইফতারের বিরতি দাবি করায় নির্বিচারে গুলি করে শ্রমিক হত্যা করা হয়েছে। রাস্তায় অসহায় রিকশা শ্রমিকদের নির্যাতন চালাচ্ছে পুলিশ। তিনি বলেন, এই অবস্থায় শ্রমিক-কৃষক-জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। মানুষের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে একটি গণবিদ্রোহে রূপ নেবে।
বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল হাশেম কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি আফসার উদ্দিন, মঞ্জুর মঈন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বাঁশখালীতে হত্যাকাণ্ডের শিকার শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসা, শ্রমিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, বকেয়া পাওয়া পরিশোধসহ সকল ন্যায্য দাবি মেনে নেয়ার দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আবুল হাশেম কবীর বলেন, লকডাউন ঘোষণার পূর্বে সরকার সকল কর্মহীন পরিবারে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু অদ্যবধি কর্মহীন কোনো হকার সরকারি সহায়তা পায়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে দৈনিক রোজগার করে অন্নের সংস্থান করা হকার ও শ্রমজীবী মানুষ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। উপরন্তু আসন্ন ঈদ সামনে রেখে চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে হকাররা দিন অতিবাহিত করছে। তিনি কর্মহীন হকারদের অবিলম্বে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের জোর দাবি জানান। হকারনেতা কবীর নিরন্ন হকারদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমাজের অবস্থা সম্পন্ন মানুষদের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন মোড়সহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে।