ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও জেলার, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া হাটটি বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে। উত্তর বঙ্গের বৃহৎ হাট বাজার গুলোর মধ্যে গড়েয়া একটি বড় ঐতিহ্যবাহী ও প্রসিদ্ধ হাট বলে পরিচিত।
গড়েয়া হাটের আয়তন ৮,৭৮একর প্রায় ব্যক্তি মালিকানা সহ প্রায় ২০ একরের কাছাকাছি। ছোট বড় মিলে প্রায় পনেরো শত দোকান ঘর রয়েছে। হাটটি প্রতি রবি ও বুধবারে বসে, সপ্তাহের পাঁচ দিনে লাগে দৈনিক বাজার। পার্শবতী জেলা পঞ্চগড়, নীলফামারী, দিনাজপুরের কাছাকাছি হওয়ায় বাহিরের জেলা গুলো থেকে প্রতিদিনই হাজার,হাজার লোক সমাগম ঘটে।
গড়েয়া হাট টি একটি কৃষি ভিত্তিক হাট।এখানে রয়েছে বিশাল জায়গা নিয়ে গরু ও ছাগলের ক্রয় বিক্রয় এর বাজার। এছাড়া ধান,পাট, গম, ভুট্টা, কবুতর ,হাস, মুরগী, সহ সকল প্রকার কৃষি জাত দ্রব্য ক্রয় বিক্রি চলে।দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন মালামাল ক্রয় বিক্রয়ের জন্য এ হাটে আসে।হাট টি একটি কৃষি ভিত্তিক হাট হলেও নেইকোন কৃষি ব্যাংক তবে নানা প্রকারের বেসরকারি এনজিও এবং সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে তিন টি।
গড়েয়া হাটের প্রধান প্রধান সমস্যা গুলি হলো হাটে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকলেও অথচ রাতে নেই কোন সরকারি ভাবে বা হাট কমিটি বা হাট ইজারাদারের পক্ষ থেকে সিকিউরিটি ব্যবস্থা।প্রতিবছরে হাটটি এক কোটি টাকার উপরে সরকারি ভাবে ডাক হয়। যাহা সরকারের রাজস্ব তহবিলে জমা হয় এবং হাটের উন্নয়নে জন্য ব্যায় করার কথা।
গড়েয়া হাটে নেই কোন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কর্মী অথচ প্রতি মাসে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কর্মীর নামে টাকা উত্তলন দেখানো হয়। হাটের সরকারি ড্রেন গুলোতে যেন ময়লার স্তুপ হয়ে আছে, মাসের পর মাস পরিস্কার না করায় পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন না থাকায় বর্ষা মৌসুমে একহাটু জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় যার ফলে সাধারণ জনগণ ও স্কুল, কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
গড়েয়া হাটে নেই কোন অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা যেখানে সবচেয়ে বেশি দোকান গুলো হলো কাপড় ও কসমেটিক এবং কয়েকটি বড় বড় ধান, চাল,পাট,ও সারের গোডাউনও রয়েছে।
গড়েয়া হাটে মহিলা মার্কেট রয়েছে ঠিকই তবে এখন মার্কেট টি পুরুষদের দখলে। হাট সভাপতি ও গড়েয়া ইউপি চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল ইসলাম শাহ রেদোর কাছে মহিলা মার্কেট বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা, এটি ১ নং ওয়াডের মেম্বার আব্দুল মজিদের দায়িত্বে আছে। আব্দুল মজিদের কাছে মহিলা মার্কেটের মহিলাদের নামের তালিকা বার বার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
গড়েয়া হাটে একটি দখল বাহিনী রয়েছে সরকারি জায়গায় যাদের নামে বেনামে প্রায় ৫০/৬০ করে দোকান রয়েছে। আর এভাবেই সরকারি জায়গা দখল করে গড়েয়া হাটির জায়গা আস্তে আস্তে সংকুচিত কারা হচ্ছে।কিছু লোকের যোগ সাজসে ও কিছু কর্মকর্তার উদাসীনতায় সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব আয়।
গড়েয়া ইউনিয়ন টি ৯৭,৮৫ কিঃমিঃ২(৩৭, ৭৮ বর্গ মাইল) এলাকা জুড়ে অবস্থিত। ২০১১সালের আদম শুমারীর হিসাব অনুযায়ী এখানকার জনসংখ্যা ছিলো প্রায় ৩১,৮৭৮জন। বর্তমানে বেসরকারি হিসেবে অনুযায়ী লোক সংখ্যা ৪২,৩৫০ জন প্রায়। ইউনিয়ন টিতে মোট গ্রামের সংখ্যা ১৫টি ও মৌজার সংখ্যা ১৫টি। এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের ইস্কন মন্দির সহ ২৬টি মন্দির,শতাধিক মসজিদ,১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়,৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,২টি কলেজ,মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক,ভুমি অফিস,সরকারি খাদ্য গুদাম, পোস্ট অফিস ,এতিমখানা রয়েছে। বিভিন্ন দলীয় সরকারের আমলে বার বার গড়েয়া কে থানা ঘোষণা করা কথা থাকলেও তা কিছু লোকজনের সমন্বয়হীনতা ওঅযোগ্য নেতৃত্বের কারণে আজও তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।