শেরপুরঃ শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে উচ্ছেদ আতংকে ভোগছে জহির উদ্দিন (৪৫) নামের এক অসহায় ভুমিহীন পরিবার।
জহির উদ্দন উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাইকুড়া গ্রামের মৃত আছর উদ্দিনের ছেলে। ৩ ছেলে ১ মেয়ে ও বৃদ্ধা মা সহ ৭ সদস্যের পরিবার জহির উদ্দিনের। জমিজমা সহায় সম্ভবল বলতে তার নেই কিছুই। পাইকুড়া বাজার ও পাইকুড়া এআরপি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে মালিঝি নদীতে জেগে উঠা চরে গত প্রায় একযুগ আগে ছোট্ট একটি ঘর নির্মাণ করে। উক্ত ঘরের একাংশে চায়ের দোকান করে পরিবারের জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি আরেকাংশে পরিবার পরিজন নিয়ে রাত্রি যাপন করে আসছে। কিন্তু ওই জমির প্রতি লোভ জাগে এআরপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন নবীর। তিনি ওই জায়গাটি বিদ্যালয়ের জায়গা দাবী করে উক্ত জায়গা থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের প্যাডে জহির উদ্দিনকে একটি নোটিশ প্রদান করেন। এসময় জহির উদ্দিন তার জায়গাটি টিকিয়ে রাখতে প্রশাসন ও সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে শুরু করে। জহির উদ্দিনের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা এর নির্দেশে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ও সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন খাঁন ওই জায়গা দখল বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর আলাদা ভাবে প্রতিবেদন দাখিল করেন। উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জহির উদ্দিনের দখলীয় জায়গাটি বিদ্যালয়ের জমি নয়। এর পরেও এআরপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন নবী উক্ত জমি থেকে জহির উদ্দিনকে উচ্ছেদ করতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রধান শিক্ষক নুরুন নবী প্রভাবশালী একজন আওয়ামীগ নেতার আত্মীয় হওয়ার সুবাধে তিনি জহির উদ্দিনকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকলেও তার দাপটে কেউ মুখ খোলতে সাহস পাচ্ছেনা।
গত ২৬ এপ্রিল সোমবার দুপুরে প্রধান শিক্ষক নুরুন নবীর আহবানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল মাহমুদ, উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফায়েজুর রহমান, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চাঁনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল মাহমুদ জহির উদ্দিনকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে উক্ত স্থাপনা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে ৩০ হাজার টাকা জহির উদ্দিনকে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাইকুড়া বাজারে জহির উদ্দিনকে চায়ের দোকান করার জন্য একটি জায়গা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়।
এ ব্যাপারে জহির উদ্দিন জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে চায়ের দোকান করার জন্য জায়গা দেওয়া হলেও ৭ সদস্যের পরিবার নিয়ে আমি থাকবে কোথায়? এ চিন্তা ও উচ্ছেদ আতংকে ভোগছেন জহির উদ্দিন ও তার পরিবার। জহির উদ্দিন তার অসহায়, দুস্থ্য ও ভুমিহীন পরিবারটি প্রধান শিক্ষক নুরুন নবীর করালগ্রাস থেকে বাঁচাতে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।