হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ জান্নাত আরা ঝর্ণাকে উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গতকাল সোমবার ঝর্ণার বাবা ওলিয়ার রহমান তাঁর মেয়েকে জরুরিভিত্তিতে উদ্ধার করতে কলাবাগান থানায় জিডি করেন। ওই জিডির ভিত্তিতেই আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বসিলার একটি বাসা থেকে ঝর্ণাকে উদ্ধার করে ডিবি।
আজ দুপুরে ডিবির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঝর্ণাকে উদ্ধার করে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। বিকেলে তাঁকে তাঁর বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
গতকাল কলাবাগান থানায় করা জিডিতে ওলিয়ার রহমান বলেন, মামুনুল হকের অপকৌশলে ঝর্ণার সুখের প্রথম সংসার ভেঙে যায়। সেই সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। একপর্যায়ে জীবনের তাগিদে কাজের সন্ধানে ঝর্ণা ঢাকায় আসে। উত্তর ধানমন্ডির একটি বাসায় ঝর্ণা বসবাস করছিলেন বলে তাঁকে জানানো হয়।
ওলিয়ার রহমান জিডিতে অভিযোগ করেন, দুদিন আগে ঝর্ণা ফোনের মাধ্যমে তাঁর নাতিকে (ঝর্ণার বড় ছেলে) জানান, তিনি গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। তাঁর ওপর চাপ যাচ্ছে। তাঁকে জরুরিভিত্তিতে উদ্ধার করতে বলেন। যেকোনো সময় তাঁকে মেরে ফেলা হতে পারে। তিনি ঢাকায় মামুনুল হকের বোনের বাসায় আছেন। ঢাকায় কোথায় আছেন, জানতে চাইলে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জিডিতে ওলিয়ার রহমান আরও বলেন, তিনি এই ঘটনা তাঁর নাতির কাছ থেকে জানতে পেরেছেন। এ বিষয়ে তিনিসহ আত্মীয়স্বজন উদ্বিগ্ন, চিন্তিত অবস্থায় দিন পার করছেন।
জিডিতে অভিযোগ করা হয়, মামুনুল হকের লোকজন যেকোনো মুহূর্তে তাঁর মেয়েকে অজ্ঞাত স্থানে অসৎ অভিপ্রায়ে আটকে তাঁকে হত্যার পর লাশ গুম করতে পারে বলে তাঁদের সন্দেহ হচ্ছে। এমন অবস্থায় তাঁর মেয়েকে জরুরিভাবে উদ্ধার করা আবশ্যক বলে জিডিতে উল্লেখ করেন তিনি।
মামুনুল হক হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব, পাশাপাশি ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব এবং জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক।
হেফাজতের বহুল আলোচিত নেতা মামুনুল হককে ১৮ এপ্রিল ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন রিমান্ডে আছেন। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে নতুন-পুরোনো মিলিয়ে অন্তত ১৮টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীসহ ঘেরাও হন মামুনুল হক। ওই নারীকে তিনি তাঁর ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ হিসেবে দাবি করেন। পরে মামুনুল হকের একাধিক বিয়ের খবর বেরিয়ে আসে।