বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান ও কাজী সেতারা বেগম দম্পতির তিন সন্তান। বড় ছেলে আশিকুর রহমান। মেজ মেয়ে নুসরাত জাহান ও ছোট মেয়ে মুশারাত জাহান মুনিয়া।
কুমিল্লা নগরীর উজির পুকুরপাড়স্থ মুনিয়াদের সেতারা সদন বাসায় মঙ্গলবার সকালে দেখা গেল সুনসান নীরবতা। শুধু মাত্র মুনিয়ার বড় ভাই আশিকুর রহমান সবুজ ও তার স্ত্রী বাসায়। সারা রাত কান্নার কারণে তাদের চোখ মুখ ফুলে লাল হয়ে আছে। সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই মুনিয়ার বড় ভাই সবুজ জানতে চান ভাই, আমার বোনের হত্যার বিচার পাব কি না। আমার আত্মপ্রত্যয়ী বোন কখনো আত্মহত্যা করতে পারে না।
মুশারাত জাহান মুনিয়ার বড় ভাই আশিকুর রহমান জানান, তিনি একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। তাদের বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই।
তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান। মা সেতারা বেগম ছিলেন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা। মেজ বোন নুসরাত জাহান গৃহিণী। থাকেন কুমিল্লায়। ছোট বোন মুশরাত জাহান কুমিল্লা মডার্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাঁচ বছর আগে ঢাকায় চলে যান।
গত বছর এসএসসি পাস করেন। পরে ভর্তি হন মিরপুর ইস্পাহানি স্কুল অ্যান্ড কলেজে। মডেলিং ও অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে খুব ভালো ছবি আঁকতে পারতেন।
আশিকুর রহমান আরো জানান, মুনিয়া গত পাঁচ বছর ধরে ঢাকায় থাকে। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে তিন ভাইবোনের মাঝে টানপোড়েনের সৃষ্টি হয়। এ সংক্রান্ত একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন।
আশিকুর রহমান সবুজ আরো জানান, সোমবার ইফতারের সময় তার মেজ ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান ফোন করে জানান তার ছোট বোন মুনিয়া আর বেঁচে নেই। তারপর তিনি সারারাত ঘুমাতে পারেননি।
আশিকুর রহমান সবুজ বলেন, তার বোন মুশারাত জাহান মুনিয়া কোনোভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না। সে খুব আত্মপ্রত্যয়ী একটা মেয়ে। নিশ্চয় এটার পেছনে রহস্য আছে। কারণ ছোট বেলা থেকেই আশিকুর রহমান তার বোনকে কোলে পিঠে করে বড় করেন। তার বোন ভালো আর্ট করতে পারে। টুকটাক মডেলিং করতো। সে কেন ফাঁসি দিবে। এটাকে হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে আশিকুর রহমান সবুজ দায়ীদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।