আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি স্কুলে হামলার ঘটনায় নিহত শিশুর সংখ্যা বেড়ে ৬৮ হয়েছে। গতকাল রোববার দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। এ হামলায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৬৫ জন। আহত শিশুদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এ ছাড়া অনেক পরিবারই এখনো তাদের শিশুদের খুঁজছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই মেয়েশিশু। যারা মারা গেছে, তাদের কবর দেওয়ার কাজ চলছে। কাবুলের দাস্ত-ই-বারচি এলাকায় সায়েদ উল সুহাদা নামের একটি স্কুলের বাইরে গত শনিবার এ হামলা চালানো হয়। এ সময় একটি গাড়িবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এরপর শিশুরা ছোটাছুটি শুরু করলে আরও দুটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এলাকাটি হাজারা জাতিসত্তার শিয়া মুসলিম–অধ্যুষিত। কেউ এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। যদিও সুন্নি সন্ত্রাসীরা প্রায়ই এ এলাকায় হামলা চালিয়ে থাকে।
এ হামলা প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আফগান কর্মকর্তা বলেন, প্রথম বিস্ফোরণটি ছিল খুবই শক্তিশালী। শিশুদের খুব কাছে এ বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ কারণে হয়তো অনেক শিশুর অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাবে না।
নিখোঁজ শিশুদের খুঁজে পেতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করছেন মোহাম্মদ রেজা আলী। তিনি বলেন, ‘আমরা সারা রাত ধরে মরদেহ কবরে নিয়েছি। এসব মরদেহের অধিকাংশই শিশুদের।’
এ ছাড়া গতকাল রোববার পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে মরদেহ খুঁজতে দেখা গেছে স্বজনদের। মোহাম্মদ রেজা আলী বলেন, ‘আমাদের সবাইকে কেন মেরে ফেলা হচ্ছে না এবং যুদ্ধের ইতি টানা হচ্ছে না?’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এ ছাড়া হতাহত শিশুদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন। এই হামলার জন্য আফগানিস্তান সরকার তালেবানকে দায়ী করেছে। তবে তালেবান এ হামলার দায় অস্বীকার করেছে।
শনিবারের ওই হামলার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, স্কুলটির সামনের রাস্তায় শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত ব্যাগ আর বই ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। এ সময় রক্তাক্ত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন স্থানীয় লোকজন।
যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার শুরু করায় কাবুলে বাড়তি নিরাপত্তা সতর্কতা জারি রয়েছে। এরপরও সেখানকার স্কুলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল।