নীলফামারীর সৈয়দপুরে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃজেলা মাদক সম্রাট মোনাফ আলী সরকার ও তার ছেলে মাহমুদ হাসান রকিসহ আরও ৪ জনকে আটক করেছে জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ১০ মে সোমবার সকাল ৯ টায় উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের খোর্দ বোতলাগাড়ী গ্রামে মোনাফ আলীর বাড়িতে এ অভিযানকালে ১৪ বোতল ফেন্সিডিল ও ৩২ টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
আটক অন্যরা হলো একই গ্রামের ফজলুর ছেলে সেলিম ওরফে রতন (২৫), পাশের বুচারীপাড়া গ্রামের হাগুড়ার ছেলে মান্নান (১৯), টগরুপাড়ার সোহাগ ইসলাম (২১) ও ছাইয়াপাড়ার গোলাম রাব্বানী (২০)। এরা মোনাফ আলীর ছেলে রকির বন্ধু ও মাদক বিক্রির সহযোগী।
খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রমিজ আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। তাঁকে সহযোগীতা করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর মোঃ জায়েদ আল জাফরী, খবির আহমেদ, আজহারুল ইসলাম, এনামুল হক, মাসুম রেজা, আজমল হোসেন ও খোকন মিয়াসহ সৈয়দপুর থানা পুলিশ।
পরে আটককৃত মোনাফ আলী সরকার ও তার ছেলে মাহমুদ হাসান রকি’র বিরুদ্ধে নিয়মিত মাদক মামলা দেয়া হয়। অন্য ৪ জনকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ে নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতে প্রত্যেককে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫শ’ টাকা করে জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রমিজ আলম।
এদিকে গত ৯ মে রবিবার বিকাল ৫ টায় সৈয়দপুর পৌর এলাকার পুরাতন মুন্সিপাড়ায় মাদক ব্যাবসায়ীর নিজ বাড়ী থেকে ৩২৩ টি ট্যাপেন্টাডল মাদক ট্যাবলেট সহ দুইজনকে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালতে তাদের এক জনকে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং অপরজনকে তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৫ শত টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর মোঃ জায়েদ আল জাফরী জানান, মোনাফ আলী সরকার উত্তরাঞ্চলের একজন মাদক সম্রাট। দীর্ঘ দিন থেকে সে সৈয়দপুর, নীলফামারী জেলাসহ রংপুর ও দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ফেন্সিডিল, ইয়াবা, গাঁজাসহ নেশাজাতীয় ট্যাবলেট টাপেন্ডাডল’র পাইকারী বিক্রেতা। সে মাদকসহ ইতোপূর্বে প্রায় ৩৫ বার আটক হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটেছে। প্রতিবারই জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও তার মাদক ব্যবসা চালায়।
সম্প্রতি সে ইউপি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে। তখন থেকে তার মাদক ব্যবসার দায়িত্ব স্ত্রী, ছেলে ও দুই জামাতা কে দিয়ে সে ঘোষণা করে আর মাদক ব্যবসা করবেনা। এরপর থেকে তার মাদক ব্যবসা চলছে ছেলে মাহমুদ হাসান রকির নেতৃত্বে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে মোনাফের বাড়ির একটি কক্ষে অবস্থানরত তার ছেলের বন্ধু ও মাদক বিক্রির সহযোগী গোলাম রাব্বানী ও সোহাগের কাছ থেকে উল্লেখিত মাদক জব্দ করা হয়। ইউপি নির্বাচন করা মূলতঃ মোনাফের মুখোশ। এই মুখোশের আড়ালে সেই এখনও মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আজও তাকে আটক করে নিয়ে আসার সময় তার সাঙ্গপাঙ্গরা বাধার সৃষ্টি করে। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রমিজ আলম স্যারের সহযোগীতায় সৈয়দপুর থানা পুলিশসহ আটককৃতদের থানায় নেয়া হয়।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল হাসনাত খান বলেন, আটককৃতদের নীলফামারী জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে