1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন

জাতীয় ঐক্য গড়ছে ফিলিস্তিনিরা, ইসরায়েলবিরোধী সংঘর্ষে নতুন মাত্রা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : বুধবার, ১৯ মে, ২০২১

ফের জেগে উঠেছে ফিলিস্তিনিরা। সব ভেদাভেদ ভুলে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলছে দখলদার ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে।

ঐক্যের নিদর্শন হিসাবে জর্ডান নদী থেকে ভূমধ্যসাগরের মধ্যবর্তী পুরো এলাকায় সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। এতে একদিকে যেমন যোগ দিয়েছে ফিলিস্তিনের পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের অধিবাসীরা।

তেমনই যোগ দিয়েছে ইসরায়েলে বসবাসকারী লাখো ফিলিস্তিনি। শুধু তাই নয়, গত কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলা ও হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে একসঙ্গে রুখে দেওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ফাতাহ। সংহতি ও সহযোগিতা নিয়ে এসেছে বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী ফিলিস্তিনিরা।
মিডিল ইস্ট আই’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় বিমান হামলার এক সপ্তাহের মাথায় রবিবার ইসরায়েলের অভ্যন্তরে আরব রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়কারী সংগঠন দ্য আরব ফলো-আপ কমিটি এই ধর্মঘটের ডাক দেয়। ধর্মঘটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কারামেহ স্ট্রাইক’ তথা মর্যাদার ধর্মঘট। ইসরায়েলে বসবাসকারী ১৬ লাখসহ অন্তত ৩০ লাখ ফিলিস্তিনি এতে অংশ নিচ্ছে। এরই মধ্যে লাখো ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছে।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিরামহীন বোমা হামলার প্রতিবাদে অধিকৃত গাজা, অধিকৃত পশ্চিম তীর ও ইসরায়েলি শহরগুলোতে এই ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই পুরো অঞ্চলের সব দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গাজা পরিচালনাকারী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রধান দল ফাতাহ উভয় গ্রুপই এই ধর্মঘট সমর্থন করেছে। ফিলিস্তিনিরা সব ধরনের অর্থনৈতিক কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ রয়েছে।

ওয়েস্ট ব্যাংক বা পশ্চিম তীর ও গাজা বর্তমান ফিলিস্তিনের প্রধান দুটি শহর। ওয়েস্ট ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে ফাতাহ মুভমেন্ট যার প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। আর যে গাজা ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে হামাস।

সারা বিশ্ব মূলত ফাতাহকে ফিলিস্তিনিদের বৈধ কর্তৃপক্ষ বলে মনে করে থাকে। অন্যদিকে হামাসকে মনে করে জঙ্গি সংগঠন। একই ফিলিস্তিনের শাসক হলেও ফাতাহ আর হামাসের সম্পর্ক মূলত সাপে-নেউলে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘এটা নজিরবিহীন। কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম দল-মত-নির্বিশেষে সব ফিলিস্তিনি এ ধরনের সাধারণ ধর্মঘটে অংশ নিয়েছে।’ কোনো কোনো বিশ্লেষক একে তৃতীয় ইন্তিফাদা তথা অভ্যুত্থান হিসাবে দেখছে।

ইসরায়েলের নিন্দা ইস্যুতে এবারই প্রথম আরব বিশ্বে বিভক্তি: গাজার অধিকৃত অঞ্চলে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত থাকলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো এবং সুদান। আর এ দেশগুলোর নীরবতাকেই আরব বিশ্বে ভাঙনের প্রথম ধাপ হিসাবে উল্লেখ করেছে দ্যা গার্ডিয়ান।

ইসরায়েল বনাম হামাস লড়াই বন্ধে কী করা উচিত এ নিয়ে আরব বিশ্বে অনৈক্যের আভাস পেয়েছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। যেখানে তুরস্ক ও ইরানের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কয়েকটি দেশ গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস বর্বরতার নিন্দা জানিয়ে তা বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছে, সেখানে এবারই প্রথম উপরোক্ত দেশগুলো এ বিষয়ে সম্পূর্ণ নীরব রয়েছে। যদিও এর আগে তাদের ভূমিকা এমন ছিল না।

বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের করা ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা নীতি এবং তথাকথিত আব্রাহাম অ্যাকর্ড চুক্তি অমান্য হওয়ার ভয়েই নিশ্চুপ রয়েছে আলোচ্য দেশগুলো। আর এ কারণেই সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো এবং সুদানের জনগণের মধ্যে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ শুরু হলেও দেশগুলো কৌশলে তা স্তিমিত করে রেখেছে।

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে মিসর, জর্ডান ও ফ্রান্স: ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার বিবদমান অবস্থাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার একটি ভিডিও কনফারেন্সে মিলিত হয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রো, তার মিসরীয় সহযোগী আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এবং জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এ বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনায় তারা ইসরায়েল ও হামাসের কাছে যুদ্ধবিরতি আশা করেন এবং দ্বিপক্ষীয় সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান।

সিসি আফ্রিকার শীর্ষ সম্মেলন থেকে এবং আব্দুল্লাহ জর্ডান থেকে ম্যাঁক্রো আয়োজিত এ কনফারেন্সে যোগ দেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট আশা করেন শিগগিরই বিবদমান দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতির আহ্বানে সাড়া দেবে এবং দ্বন্দ্ব বাড়ানো রোধে ভূমিকা রাখবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি