1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ পূর্বাহ্ন

শিশুদের কি টিকার আওতায় আনা উচিত?

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২৬ মে, ২০২১

একটি শিশু জন্মের পরই তাকে সুস্থ রাখতে নানা ধরনের টিকা দেওয়া হয় এবং পুরো বিশ্বজুড়েই শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম চলে। শিশুদের জীবন রক্ষায় দেওয়া নানা টিকার তালিকায় কি এবার কোভিড-১৯ টিকা যুক্ত করার সময় হয়েছে?

যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে শিশুদের কোভিড-১৯ টিকা দিতে শুরু করেছে। যুক্তরাজ্য সরকার দেশটির ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সের প্রায় ছয় লাখ শিশুকে এরইমধ্যে কোভিড-১৯ টিকা দিয়েছে। আগামী বছর দেশটি এর থেকেও কম বয়সের শিশুদের টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা করেছে। এজন্য তারা কোভিড টিকার নিরাপত্তা নিয়ে আরো তথ্য হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় আছে।

যুক্তরাজ্যে এখনো প্রাপ্ত বয়স্কদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। সরকার আগামী জুলাই মাসের মধ্যে সব প্রাপ্ত বয়স্ককে টিকার প্রথম ডোজ দিতে চাইছে। তবে শিশুদের বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকার থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

কোভিড টিকা কি শিশুদের জীবন রক্ষা করবে?

বৈজ্ঞানিক ভাবেই এখন এই প্রশ্ন উঠছে- কোভিড-১৯ টিকা কী আসলেই শিশুদের জীবন রক্ষা করতে পারবে। এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বেশ জটিল।

কারণ, এক এক দেশের ক্ষেত্রে এ প্রশ্নের উত্তর এক এক রকম হবে। এক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। শিশুদের টিকা দেওয়া উচিত হবে নাকি ওই টিকা অন্যান্য দেশে পাঠিয়ে ওইসব দেশের স্বাস্থ্যকর্মী ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের দিলে তাতে বেশি জীবন রক্ষা পাবে সেটা বিবেচনা করা উচিত। এখন পর্যন্ত শিশুদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়া বা মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক কম।

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ভ্যাক্সিনেশন অ্যান্ড ইমুনাইজেশন কমিটির সদস্য অধ্যাপক অ্যাডাম ফিন বলেন, ‘‘সৌভাগ্যজনক ভাবে এই মহামারীর মধ্যেও অল্প কিছু ভালো জিনিসের একটি হচ্ছে, শিশুদের বেলায় এই ভাইরাসে মারাত্মকভাবে সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল।”

সংক্রমিত হলেও শিশুদের শরীরে রোগের উপসর্গ খুবই কম থাকে বা একেবারে থাকেই না। সেই তুলনায় বয়স্কদের শরীরে রোগের উপসর্গ অনেক বেশি দেখা যায় এবং মৃত্যু ঝুঁকি বেশি। তাই তাদের আগে টিকা দেওয়া উচিত।

বিবিসি জানায়, শিশুদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সাত দেশে গবেষণা চালানো হয়েছে। লানসেট ম্যাগাজিনে ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহামারীতে প্রতি ১০ লাখ শিশুর মধ্যে দুই জনের কম শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

শিশুদের কোভিড টিকা ‍লাভজনকও হতে পারে

বয়স্কদের সুরক্ষায় অনেক সময় শিশুদের টিকা দেওয়া হয়। কিছু কিছু দেশ এই কৌশল অবলম্বন করে।

যেমন, ফ্লুর বেলায় যুক্তরাজ্য এই কৌশল অবলম্বন করে। যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর দুই থেকে ১২ বছরের শিশুদের ফ্লু প্রতিরোধে নাকের স্প্রে দেওয়া হয়। মূলত তাদের পরিবারের বয়স্কদের সুরক্ষায় এই কৌশল ব্যবহার করা হয়।

অনেকের মতে কোভিড-১৯ এর বেলায়ও একই কৌশল নেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ তৈরি করতে। কোথাও হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়ে গেলে সেখানে বেশির ভাগ মানুষের দেহেই অ্যান্টিবডি থাকে। ফলে ভাইরাস সেভাবে বিস্তারলাভ করতে পারে না।

কোভিড-১৯ এ টিকা করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে বেশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। কেউ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণের পর তার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অর্ধেকে নেমে আসে। যদিও তারপরও তার আক্রান্ত হওয়ার ৫০ শতাংশ ঝুঁকি থেকেই যায়।

করোনাভাইরাস নিয়ে এখন পর্যন্ত যেসব গবেষণা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, শিশুরা এই ভাইরাসের বিস্তারে তেমন কোনো ভূমিকা রাখে না। কিন্তু কিশোর-কিশোরীদের ভাইরাস বিস্তারে ভূমিকা আছে।

তাই কেউ কেউ মাধ্যমিক স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার কথা বলছেন। কিন্তু এটা যে লাভজনক হবেই সে কথা বলা যাচ্ছে না।

বিবিসি জানায়, ইংল্যান্ডে ১৬-১৭ বছর বয়সের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে একচতুর্থাংশের দেহে করোনভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। তাদের কেউই টিকা নেয়নি।

সেক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য বা তাদের মত দেশ ধরেই নিতে পারে, শিশুদের টিকা দেওয়া ছাড়াই ভাইরাসের বিস্তার আটকানোর মত যথেষ্ট ইমিউনিটি ওখানে তৈরি হয়ে গেছে।

শিশুদের টিকা নৈতিকভাবে কতটা গ্রহণযোগ্য

একটি শিশুকে টিকা দিতে গেলে কে টিকা পাচ্ছেন না, নৈতিকভাবে সেটা মনের উপর চেপে বসতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকেও বলা হচ্ছে, ধনী রাষ্ট্রগুলোর উচিত তাদের শিশুদের কোভিড-১৯ এর টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে সেই টিকা বিশ্বের বাকি দেশগুলোকে দান করা।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনা করেছিলেন অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড। তিনি বলেন, টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে যদি শিশুদের প্রাধান্য দেওয়া হয় তবে সেটা ‘নৈতিকভাবে ভুল’ সিদ্ধান্ত হবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি