ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে খুলনার কয়রা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। এসব গ্রামে চলছে খাদ্যের জন্য হাহাকার।
এরই মাঝে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছে খাদ্যসামগ্রী। সেই সব খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ নুডলস ও চিড়া বিতরণ করা হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ নুডলস ও চিড়া খেয়ে শিশু ও বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতিরঘেরী এলাকার বাসিন্দা অনিশ বলেন, বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার পর আমাদের খেয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। ৩/৪ দিন পর চেয়ারম্যান-মেম্বাররা যে খাবার দিয়েছেন তার মধ্যে নুডলস ও চিড়া খেয়ে শিশু ও বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে দেখি খাবারের মেয়াদ নেই।
মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বলেন, গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলো ক্ষুধার জ্বালায় ত্রাণের খাবার পেয়ে শিশুদের নুডলস ও চিড়া খাইয়েছেন। অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করার আগে দেখে নেওয়া উচিত ছিল মেয়াদ আছে কিনা। বাঁধ ভেঙে সব কিছু হারিয়ে আমরা বিপদে পড়েছি। বিপদের সময় সরকারিভাবে দেওয়া খাবার যদি মেয়াদোত্তীর্ণ হয় তাহলে আমরা কার কাছে বিচার দেবো?
মেয়াদোত্তীর্ণ ত্রাণের খাবার বিরতণ করার কথা স্বীকার করে কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে শুকনো খাবারের ৭০০ প্যাকেটের একটি প্যাকেজ পাঠিয়েছিল। প্রতি প্যাকেটে ছিল ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ২ কেজি চিড়া, সয়াবিন তেল ১ লিটার, লবণ এক কেজি, নুডলস ১ প্যাকেট। এর মধ্যে চিড়া ও লুডলস মেয়াদোত্তীর্ণ। যেগুলো দেওয়া হয়ে গেছে এর মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণগুলো আমরা সংগ্রহ করে ফেলেছি। রিপোর্টও পাঠিয়ে দিয়েছি যে, খাবারগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ। মন্ত্রণালয়ের গোডাউন থেকে খাবারগুলোর মেয়াদ না দেখে পাঠানো হয়েছে। মোট ৭শ’ প্যাকেট এসেছে। সব বিতরণ করা হয়ে গেছে। মহারাজপুর ইউনিয়নে ১৫০ প্যাকেট দেওয়া হয়েছে।
গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কয়রা, কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীর পানির জোয়ার ৬ থেকে ৭ ফুট বৃদ্ধি পায়। এতে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ১১টি স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে এবং উপচে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। বাড়িঘরে জোয়ারের পানি ঢোকায় ২৫ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।