1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১১ পূর্বাহ্ন

সারা দেশে ৫০০ টাকায় মাসজুড়ে ইন্টারনেট

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : রবিবার, ৬ জুন, ২০২১

সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের একই দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। রাজধানী ঢাকা হোক, আর দেশের কোনো ইউনিয়ন হোক—ইন্টারনেট সেবাদাতাদের একই দামে সংযোগ দিতে হবে। নির্ধারিত দামের কম নেওয়া যাবে, বেশি নয়।

বিটিআরসি এই কর্মসূচির নাম দিয়েছে ‘এক দেশ, এক রেট’। ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সূত্রে জানা গেছে, ‘এক দেশ, এক রেটের’ আওতায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য তিনটি প্যাকেজ থাকবে। এই প্যাকেজগুলোর দাম আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি বিটিআরসি। আজ রোববার এক অনুষ্ঠানে দামের বিষয়ে তারা জানাবে।

সূত্র জানিয়েছে, প্রথম প্যাকেজের মূল্য হতে পারে মাসে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা, গতি হবে ৫ এমবিপিএস (মেগাবাইট পার সেকেন্ড)। দ্বিতীয় প্যাকেজের মূল্য হতে পারে মাসিক ৮০০ টাকার মধ্যে, এর গতি হবে ১০ এমবিপিএস এবং তৃতীয় প্যাকেজের গতি হতে পারে ২০ এমবিপিএস, দাম হবে মাসিক ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে।

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের গ্রাম এলাকায় ইন্টারনেটে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেন তরুণ উদ্যোক্তা বেলাল সরকার। তিনি এখন ২৫ এমবিপিএস গতির একটি সংযোগ ব্যবহার করেন মাসে আড়াই হাজার টাকা দিয়ে। আরেকটি বিকল্প সংযোগের পেছনে তাঁর মাসিক ব্যয় এক হাজার টাকা, যেখানে দুই এমবিপিএসের বেশি গতি পাওয়া যায় না বলে জানান তিনি।

বেলাল সরকার প্রথম আলোকে বলেন, যদি ১ হাজার ২০০ টাকায় ২০ এমবিপিএস গতি পাওয়া যায়, সেটা হবে খুব ভালো খবর। এতে ইন্টারনেটে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করা উদ্যোক্তাদের ব্যয় কমবে। সাধারণ মানুষও উপকৃত হবে। তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, গতির কথা যেটা বলা থাকে, সেটা পাওয়া যায় না। আবার প্রতিশ্রুত গতি দেওয়া হয় ‘ক্যাশ’ সার্ভার থেকে। কিন্তু আউটসোর্সিংয়ে সব ধরনের সার্ভারে একই গতি দরকার।

বিটিআরসির হিসাবে, দেশে গত মার্চ শেষে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংযোগ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৮ লাখ। করোনাকালে এ সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এক বছর আগেও সংযোগ সংখ্যা ১৮ লাখ কম ছিল। ইন্টারনেট সেবাদাতাদের দাবি, একটি সংযোগের বিপরীতে অন্তত চারজন ব্যবহারকারী রয়েছেন। ওদিকে মোবাইল অপারেটরদের তারহীন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ। উল্লেখ্য, সর্বশেষ ৯০ দিনে একবার ইন্টারনেটে প্রবেশ করলেই তাঁকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ধরা হয়।

করোনাকালে দেশে ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই বেড়েছে। পড়াশোনা, ঘরে বসে অফিসের কাজ করা এবং বিনোদনের জন্য ইন্টারনেট নির্ভরতা তৈরি হয়েছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন ও শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেওয়া সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, শহরে মানুষ একরকম দামে ইন্টারনেট পাবে, হাওরে-পাহাড়ে আরেক দামে পাবে, এটা হতে পারে না। তিনি বলেন, ইন্টারনেট হলো ডিজিটাল যুগের মহাসড়ক। গ্রামের মানুষকে সেই মহাসড়কে যুক্ত করতে ইউনিয়নগুলোকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের আওতায় আনা হচ্ছে এবং ইন্টারনেটের ‘এক দেশ, এক রেট’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বিটিআরসি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) প্রায় ১ হাজার ১০০ ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক কেব্‌ল সংযোগ স্থাপন করেছে। অন্যদিকে ইনফো সরকার-৩ প্রকল্পের মাধ্যমে জনগণের অর্থে ২ হাজার ৬০০ ইউনিয়নকে ফাইবার অপটিক কেব্‌ল সংযোগের আওতায় আনা হয়েছে। দেশে ইউনিয়নের সংখ্যা ৪ হাজার ৫৮৮। টেলিযোগাযোগমন্ত্রী জানান, চলতি বছরের মধ্যে সব ইউনিয়ন ফাইবার অপটিক কেবলের আওতায় আসবে।
ইন্টারনেটের তুলনামূলক দামের হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপনকারী যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট কেব্‌লডটইউকে গতকাল দেখা যায়, বাংলাদেশ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দামের দিক দিয়ে বিশ্বে ৫৮তম। মানে হলো, ৫৭টি দেশে দাম বাংলাদেশের চেয়েও কম। এ দেশে মাসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের গড় দাম ৩১ ডলারের কিছু বেশি, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ৬০০ টাকা। ভারতে একই দর ১৪ ডলারের নিচে।

ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ব্যান্ডউইডথ সঞ্চালনের ব্যয় কমাতে পারলে তৃণমূলে কম মূল্যে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া সম্ভব। যদি দেখা যায়, সঞ্চালন ব্যয় বেশি পড়ছে, তাহলে কারও পক্ষে কম দামে দেওয়া সম্ভব হবে না। নতুন দাম বেঁধে দেওয়ার পর মান ঠিক থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতি গ্রাহক বুঝে নেবেন। কেউ নির্ধারিত দামের বাড়তি বিক্রি করতে পারবে না।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি