” কিশোর বয়সকে বলা হয় জীবনের সবচেয়ে সুখি একটি বয়স। কারন এই বয়সেই শৈশব থেকে কিশোর হয়। তারপর যৌবনে পা পরে। বুদ্ধি এবং কাজে অনুপ্রেরণা আসে সাধারণত এই বয়সেই। কিন্তু বর্তমানে চিএটা তার সম্পুর্ন ভিন্ন। মাথায় লম্বা চুলের সাথে বিটখুটে চুলের কাটিং এবং বিভিন্ন ধরনের রং লাগিয়ে দাপিয়ে বেরাচ্ছে। সাথে টিকটক, লাইকইট থেকে শুরুকরে ডিজে গান এবং দামি দামি মোটরসাইকেলে বিকট আওয়াজের হর্ন বাজিয়ে ১৫-২০ জন। কখনও কখনও ১০-২০০ পর্যন্ত একসাথে জরো হতে দেখা যায়। উৎসুক হয়ে গাজা,মদ,হিরোইন,কোকেন,ইয়াবা, পিথডিন,ঘাম,থেকে শুরু করে মাদক পাচার এবং নারী পাচারেও থেমে নেই এই কিশোর গ্যাংরা।কিছু কিছু উচ্চবিত্ত মা বাবারদের উচ্চবিলাশিতার ফল ভোগ করছেন অনেক ভালো মা বাবারা। তারা জানেও না সন্তানরা পড়ালেখার মাঝে কি করে বেরাচ্ছে। হয়তো অনেকেই কর্মে ব্যাস্ত হয়ে পরেন। আর এই কিশোর গ্যাংদের পরোক্ষভাবে বা ছায়ায় সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে কিছু অসাধু নেতা কর্মিরা। কারন তাদের বাহিনী সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে। সম্প্রতি গাজীপুরের বেশ কিছু স্হানে তাদের ভয়বহতা আরো মাএা ছারাচ্ছে। গাজীপুরের টঙ্গী, বড়বাড়ি, বোড বাজার এদের দলবদ্ধ চক্রের সদস্যদের প্রায়ই দেখা যায়। গাজীপুর চৌরাস্তায় সারাদিন তো খারাপ মেয়েদের আনাগোনা আছেই। মাঝে মাঝে এই সমস্যার মাজে পরতে হয় আগত বিভিন্ন মানুষদের। রাএি নামলেই চিএ আরো ভয়াবহতা পায়। পতিতাদের অবাদ চলাফেরার সাথে অনেক সময় দেখা যায় ১০-১৬ বছরের ছেলেমেয়রা প্রকাশ্যই নির্মাণাধীন ব্রিজের পিলারের নিচে বসে মাদক সেবন করছে। যাদের অধিকাংশই টোকাই বলে পরিচিত। তাছারা ময়মনসিংহ হাইওয়ে রোডের অনেক স্হানেই তাদের দেখা যায় এবং অটোরিকশা ছিনতাই সহ নানান অপকর্মে লিপ্ত হয়। তাছারা লক্ষিপুরা, গনির টেক, সহ বিভিন্ন স্হানে এরা দলবদ্ধ ভাবে বসে থাকে এবং নেশা করে। শিল্পএলাকা হওয়ায় গার্মেন্টস কারখানা ছুটি হলেই এদের দৌরাত্ম আরো বেরে যায়। তাছারা অসংখ্য অলিগলিতে এরা চুপটি মেরে বসে থাকে এবং সুযোগে স্বার্থ হাতিয়ে নেয়।
সর্বশেষ ১ লা জুন গাজীপুরের টঙ্গীর আরিচপুর এলাকায় একটি ফুচকার দোকানে খেতে আসেন ডি কোম্পানির কয়েকজন সদস্য। সে সময় ওই ফুচকা দোকানের সব কটি চেয়ারে মানুষ বসা ছিল। তখন ডি কোম্পানির সদস্যরা চেয়ার ছেড়ে দিতে বলেন। চেয়ার ছেড়ে না দেওয়ায় অতর্কিত তুহিন আহম্মেদ ও তুষার আহম্মেদকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন তাঁরা। এ ঘটনায় তুহিন আহম্মেদ টঙ্গী পূর্ব থানায় ডি কোম্পানির সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এবং এলাকায় তখন ভয় ছরিয়ে পরে।
মামলা করার পরদিন ৩ জুন ডি কোম্পানির সদস্যরা আরিচপুর এলাকার একটি দর্জি দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। আরজু মিয়া নামের এক ব্যক্তিসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করেন তাঁরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে এই খবর আসার পর র্যাব–১ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। র্যাব গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে আসে, গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার মুর্তিমান আতঙ্ক ডি কোম্পানির কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে দিচ্ছেন রাজিব চৌধুরী। পাঁচ বছর আগে ফেসবুকে এই ডি কোম্পানি নামের গ্যাংয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এই গ্যাংয়ের সদস্যসংখ্যা ৫০। তাঁদের বয়স ১৮ বছর থেকে ২৫ বছর। এলাকার মাদক, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন ডি কোম্পানির সদস্যরা।
র্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, বর্তমানে উঠতি বয়সের ছেলেদের ক্ষমতার দাপট দেখানো নিয়ে বিভিন্ন কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে মারামারি আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এলাকায় নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করার জন্য উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায়। বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালায়। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর চড়াও হয়ে খুনোখুনিও করে।