সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: ৫২ লাখ টাকায় সংস্কারকৃত গ্রামীন জনপদের একটি রাস্তা মাত্র ১০ মাসেই ধ্বসে পানিতে গেছে। ঠায় ঠায় রাস্তার মাঝখান ভেঙ্গে বিশালকৃতির গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চলাচলে অচলাবস্থায় পড়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। সে সাথে দেখা দিয়েছে যে কোন মূহুর্তে ওই গর্তে পড়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা। নিম্নমানের উপকরণ ও যাচ্ছে তাই ভাবে কাজ করায় এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এজন্য তারা দ্রুত সমস্যা সমাধান এবং দূর্নীতির সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলী দলবাড়িপাড়া এলাকার প্রায় ২ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি কাঁচা ছিল। মাত্র ১০ মাস পূর্বে সৈয়দপুর উপজেলা ত্রাণ কার্যালয়ের অধীনে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ৫১ লাখ টাকা ব্যায়ে হেরিংবোন (ইট বিছিয়ে) করা হয়েছে।
সংস্কারের সময় নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা এবং বেডিংয়ে বালি দিয়ে ঠিকমত ডাম্পিং ও প্রয়োজনীয় স্থানে গাইড ওয়াল না করা এবং ইট ফাক ফাক করে বিছিয়ে ইটের মাঝখানের গ্যাপ (ফাকা অংশ) শুধু বালি দিয়ে ভরাট করে যেনতেনভাবে কাজ শেষ করায় এলাকাবাসী অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি গুরুত্ব না দেয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নীলফামারী শহরের সোহেল কন্সট্রাকসন এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে নামকাওয়াস্তে কাজ করে যথারীতি বিল উত্তোলন করেছে।
একারনে কাজ করার মাত্র ১০ মাসের মাথায় রাস্তাটির মাঝ বরাবর বেশ কয়েক জায়গায় বড় বড় গর্ত হয়েছে। গত কয়েকদিনের সামান্য বৃষ্টিতেই ওই গর্তের মাধ্যমে পানি গড়িয়ে রাস্তাটি পাশের নিচু জমিতে সম্পূর্ণ মাটি ও ইট ধ্বসে গেছে। এর ফলে রাস্তার অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় চলাচলে চরম অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে।
কোন প্রকার যানবাহন যাতায়াত করতে পারছেনা। ফলে দূর্ভোগ দেখা দিয়েছে। তাছাড়া প্রায় কোমড় সমান গর্তে যে কোন সময় যানবাহন বা লোকজন পড়ে গিয়ে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশংকা রয়েছে । এলাকাবাসী আরও বলেন, ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রায় ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও গর্ত সংস্কারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বর্ষার আগে সংষ্কার না হলে এ পরিস্থিতি আরও প্রকট হলে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়বে এবং সম্পূর্ণ রাস্তাই ভেঙ্গে নিচে নেমে যাবে। বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাস্তা ভাঙ্গার বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে মুঠোফোনে অবগত করেছি। তারা কোন উদ্যোগ না নেয়ায় রাস্তাটি ঠিক করতে পারছিনা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আবু হাসনাত সরকার মুঠোফোনে জানান, রাস্তাটি প্রায় ১ বছর আগে সংস্কার করা হয়েছে। এখন বর্ষাকাল, বৃষ্টির কারণে রাস্তার নিচের মাটি সরে যাওয়ায় হয়তো গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় উপরের মাটি, বালি ও ইট ধ্বসে গেছে। দ্রুত ঠিকাদারের মাধ্যমে রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সোহেল কন্সট্রাকশন এর স্বত্বাধিকারী সোহেল রানার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, রাস্তাটির কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ১ বছর আগে। যথাযথভাবে কাজ সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছি। এখন ভেঙ্গে গেলে তা দেখার দায়িত্ব আমার নয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাসিম আহমেদের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। পিআইও কে বলেছি রাস্তাটি ঠিক করে দেওয়ার জন্য।