লালমনিরহাট প্রতিনিধি: তিস্তা ও ধরলার পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত তিন দিনে প্রবল ভাঙনে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের বসতভিটা, আবাদিজমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ হুমকির মুখে রয়েছে বাঁধসহ নানান স্থাপনা। বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই তীব্র ভাঙনে দিশেহারা লালমনিরহাটের তিস্তা ও ধরলা পাড়ের মানুষ। নদীতে চলে গেছে ৫টি বসত ভিটা সহ আবাদি জমি। আমাদের লালমনিরহাট প্রতিনিধি উত্তম রায়ের তথ্য নিয়ে দেখুন প্রতিবেদনে –
ভিও : রোববার সকালে দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজে ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার নিচে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিছুটা পানি বৃদ্নিধি পেয়েছে ধরলা নদীতেও । খানিকটা পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন ।
দিশেহারা ধরলা ও তিস্তা পারের কুরুল,বুমকা,ফলিমারি ও আদিতমারি মহিষখোচা সহ কয়েকটি স্থানে। উজানের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলায় মোগলহাটের,কুরুল, ফলিমারী এলাকায় ধরলা নদীর ডান তীরে গত তিন দিনে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদীগর্ভে চলে গেছে কলা ক্ষেত ও ভুট্টাসহ অর্ধশত বিঘা আবাদিজমি। গৃহহারা হয়েছেন ৫টি পরিবার। অসহায় পরিবারগুলো স্থানীয় বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে আছেন।
তিস্তার ভায়াবহ ভাঙনে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের কুটিরপাড়, বালাপাড়া, বাদিয়ারটারী ও চৌরাহা গ্রামে বিলীন হয়েছে ৫ টি পরিবারের বসতভিটা। তিস্তা পারের কুটিরপাড় এলাকার এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি বালুর বাঁধ হুমকি মুখে পড়েছে। এই বাঁধটি স্থানীয়রা নিজস্ব অর্থে প্রায় ১৫ লাখ ব্যয়ে নির্মাণ করেন। এই বাঁধ রক্ষায় তিস্তাপাড়ের হাজারও পরিবার আশায় বুক বাঁধে আছেন।
গত তিন দিনে তিস্তার প্রবল ভাঙনে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের কুটিরপাড় এলাকায় শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ঝুঁকিতে থাকা অর্ধশত বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
মোগলহাট ইউনিয়নের কুরুল গ্রামের কয়েকজন বলেন, নদীতে আবাদি জমি বিলিনি হয়েছে আর ৩০ গজ দুরে বেসতবাড়ী এখনো্ই ভাঙ্গন রোধে কাজ না করলে তাও বিলিন হয়ে যাওয়ার আশ্কায় তারা।আরও বলেন জমিজমা হারিয়ে পরিবার নিয়ে আজ নিঃস্ব তারা।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কুরুল,বুমকা ও ফলিমারীতে গত কয়েক দিন আগে চোখের সামনেই বসতভিটা ধরলা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এখন আশ্রায় নিয়ে আছেন অন্য জায়গায়।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডে র নির্ববাহী প্লেরকৌশলী বলেন,ধরলা ও তিস্তার ভাঙন এলাকা পরিদর্শ করেছেন। বরাদ্দ পেলে ভাঙনকবলিত এলাকায় দ্রুত ভাঙ্গন রোধে কাজ করা হবে ।
নদী পারে ভুক্ত ভোগি বাসিন্দা দিপঙ্কর ,রাধারাণী,মিঠু ও অঅশরাফ জানান,বর্ষার শুরুতেই নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে যদি এখনই ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা পানি উন্নয়ন বোর্ডবা সরকার না গ্রহন না করেন তাহলে কুরুল,বুমকা মৌজা বিলিন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে মিজানুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাট জানান, তিস্তায় ৩-৪টি ধরলায় তিনটি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে । জুরুরী ভিত্তিতে এসব এলাকায় ভাঙ্গন রোধে কাজ করা হবে।