1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৭ অপরাহ্ন

বিইআরসির কারণে এলপিজি শিল্প ধ্বংসের মুখে বলে মনে করেন লোয়াবের প্রেসিডেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ১৬ জুন, ২০২১

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারণে এলপিজি (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) শিল্প ধ্বংসের মুখে বলে উল্লেখ করেছেন এলপিজি অপারেটরদের সংগঠনের লোয়াবের প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের বল রুমে লোয়াব আয়োজিত ‘এলপি গ্যাসের মূল্যহার এবং এলপি গ্যাস শিল্প, বাজার ও ভোক্তাসাধারণের ওপর ঘোষিত মূল্যহারে প্রভাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বলেন।

লোয়াব প্রেসিডেন্ট বলেন,বর্তমান এলপিজি খাতে মোট ৩০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। যা জিডিপির প্রায় ৭ শতাংশ। বাংলাদেশে এমন কোন শিল্প আমি দেখিনি যা পাঁচ বছরে জিডিপির ৬/৭ শতাংশ হতে পারে। এলপিজি ইন্ডাস্ট্রির ফলে আমরা প্রতি বছর ৫০ হাজার কিউবিক মিটার গ্যাস সাশ্রয় করছি। এই ৫০ হাজার কিউবিক মিটার গ্যাস বর্তমানে প্রডাক্টিভ সেক্টরে ব্যবহার হচ্ছে। যা সার বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য উৎপাদন খাতে ব্যবহার করা হয়। যে কোন দেশে এলপিজি সেক্টরের বৃদ্ধি হলে এর পাশাপাশি অন্যান্য শিল্প বৃদ্ধি হয়।

তিনি বলেন,বিইআরসি ঘোষিত মূল্যহার প্রকৃত উত্পাদন ব্যয়ের চেয়েও কম এবং ডিস্ট্রিবিউটর ও রিটেইলারদের যে ব্যয় ধরা হয়েছে তা সরকারি এলপি গ্যাসের তুলনায় অনেক কম। যেমন সরকারি এলপি গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটরের জন্য বিইআরসি নির্দিষ্ট করেছে ৫০ টাকা,অপরদিকে বেসরকারি এলপি গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটরের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে ২৪ টাকা মাত্র। এই অসঙ্গতি ডিস্ট্রিবিউটরদের ক্ষুব্ধ করেছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মচারি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘোষিত মূল্যহারে এলপি গ্যাস বিক্রির জন্য হয়রানি শুরু করলে অনেক ডিলার ও রিটেইলার এলপি গ্যাসের ক্রয় বিক্রয় বন্ধ করে দেয়।

তিনি আরও বলেন, আপনারা সবাই জানেন, আমরা যে মূল্যে এলপিজি গ্যাস বিক্রি করছিলাম আমরা তাতে লোকসানে ছিলাম। ২০১৬ সালে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের একটি মামলার কারণে বিইআরসি মূল্য নির্ধারণ করা শুরু করে। যখন এলপিজি গ্যাসের বাল্ক প্রাইস ছিল পনেরশো টাকা, সেই প্রেক্ষাপটে এই মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে সেই প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়ে গিয়েছ। এলপিজি গ্যাসের দাম নির্ধারণ বিষয়ে আমরা বিইআরসির সাথে বারবার কথা বলেছি,তাদের কাছে গিয়েছি, কিন্তু এই বিষয়ে তাদের কোন দক্ষতা, যোগ্যতা কোন কিছুই নেই। দুঃখের বিষয় তারা এমন একটি মূল্য নির্ধারণ করেছে, যা বর্তমান বাস্তব মূল্যের চেয়ে অনেক কম।

‘আমাদের প্রস্তাবের সঙ্গে বিইআরসি ৫-৬টি কস্ট কম্পোনেন্টের ক্ষেত্রে বড় ধরনের গরমিল করায় এই সমস্যা হয়েছে। আশা করছি, বিইআরসি মূল্যহার সংশোধনের যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে তারা এই গরমিল নিরসন করে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নতুন মূল্যহার ঘোষণা করবেন। ঘোষিত মূল্যহারে সৌদি কন্ট্রাক্ট প্রাইস (সিপি) গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও ত্রুটি রয়েছে। যে মাসের  জন্য মূল্যহার ঘোষিত হবে সে মাসের মূল্যহার না নিয়ে এক মাস আগেকার মূল্যহার নেওয়ার ফলেও ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। ’

এলপিজি গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন,আমরা ডিস্ট্রিবিউটরদের খরচ দিয়েছি ৫০ টাকা, তারা সেই খরচ ধরেছে ২৪ টাকা। অন্যদিকে বিপিসির ডিস্ট্রিবিউটরদের খরচ ৫০ টাকা ধরা হয়েছে। এটা খুবই হাস্যকর ব্যাপার নয় কি। সরকারি প্রতিষ্ঠান ডিস্ট্রিবিউটরদের খরচ এক ধরনের আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আরেক ধরনের। এলপিজি হচ্ছে পেট্রোলিয়াম পদার্থ। এ ধরণের পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়ার প্রবিধান বিইআরসির নেই। তবুও তারা আদালতের চাপে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীরা তাদেরকে সহায়তা করেছি। কিন্তু দেখা গেলো যখন দাম ঘোষণা হলো,তারা একপেশে একটা দাম ঘোষণা করল। তারা আসলে এই খাতটিকে ধ্বংস করতে চায়।

সাবসিডি’র বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জ্বালানির প্রত্যেকটি ফর্মেই সাবসিডি আছে, এলএনজি, ডিজেল ও ইলেকট্রিসিটিতেও সাবসিডি আছে। শুধুমাত্র এলপিজি খাতেই সাবসিডি নেই। সব জ্বালানিতেই যেহেতু সাবসিডি আছে, এখন সরকার যদি মনে করেন ভোক্তা পর্যায়ে কম দামে পৌছে দেওয়ার জন্য এলপিজি খাতে সাবসিডি দেওয়া উচিত, তাহলে উদ্যোগ নিতে পারে। সহজলভ্য করতে হলে অবশ্যই সরকারের সাবসিডি দিতে হবে। বর্তমানে এই খাতের সবাই লস করছি। ’

সংবাদ সম্মেলনে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেডের পক্ষে লোয়াবের প্রতিনিধি হিসেবে প্রকৌশলী জাকারিয়া জালাল এবং ওমেরা’র এলপি গ্যাসের পক্ষে প্রকৌশলী শামসুল হক প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন।  বেক্সিমকোর মুনতাসির আলম ও পেট্রোম্যাক্সের নাফিস কামালসহ লোয়াবের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রকৌশলী জাকারিয়া জালাল বলেন, বর্তমান সরকারের একটি সুচিন্তিত ও ভালো সিদ্ধান্তের ফলে মাত্র ৫ বছরেই এই খাত প্রবৃদ্ধি করেছে। এতো অল্প সময়ের মধ্যে এই খাতের যে পরিবর্তন হয়েছে,তা অন্য কোনো খাতে দেখা যায়নি। আমরা চাই ফিক্সড একটা প্রাইজ হোক, তবে সেটা অবশ্যই যুক্তিস্মত হোক। যেখানে ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণ থাকবে এবং ব্যবসায়ীদের স্বার্থও সংরক্ষণ থাকবে। আবার ভোক্তাকে সংরক্ষণ করতে গিয়ে যাতে ব্যবসায়ীদের মেরে ফেলা না হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি