ওই প্রকল্পের হিসাবে দেখা যায়, সার্জিক্যাল মাস্ক কেনা হয় মোট ১ লাখ ৭ হাজার ৪০০টি। এতে খরচ হয় ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪৯৩ টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি মাস্কের দাম পড়েছে ৩৫৬ টাকা ৯৬ পয়সা। একই সময়ে সিএমএসডির মাধ্যমে কেনা হয়েছে ১ কোটি ৭ লাখ ২০ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক। খরচ হয়েছে ২৩ কোটি ২৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। সিএমএসডির প্রতিটি মাস্কের দাম পড়েছে ২১ টাকা ৭২ পয়সা।
এ ছাড়া ওই প্রকল্পের আওতায় এন-৯৫ মাস্ক কেনা হয় ৫ লাখ ২৯ হাজার ৬২০টি। গড়ে প্রতিটির দাম পড়েছে ২৯৩ টাকা ৭৭ পয়সা। আর কেএন-৯৫ মাস্ক কেনা হয়েছে ৪ লাখ ৬০ হাজার। গড়ে প্রতিটির দাম পড়েছে ৪২৮ টাকা।
আজিজুর রহমান সিদ্দিকীর আগে এই প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন ইকবাল কবির। প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তাঁকে এই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে বর্তমান পিডির (প্রকল্প পরিচালক) সঙ্গে কথা বলেন।’
ঢাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখন মানভেদে খুচরায় ২ থেকে ১০ টাকায় একটি সার্জিক্যাল মাস্ক পাওয়া যায়। দোকানিরা বলেছেন, গত বছর করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর মাস্কের সংকট দেখা দিয়েছিল। তখন দাম বেড়েছিল। অনেকের কাছে তখন এই মাস্ক ছিল না। কিন্তু একটি সার্জিক্যাল মাস্কের দাম ৩৫০ টাকার বেশি হবে, এমন ছিল না। তখন ২৫-৩০ টাকায় মাস্ক বিক্রি হয়েছে।
করোনাকালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী যেমন পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইত্যাদি দিয়ে আসছে সরকার। সিএমএসডি মূলত এসব সামগ্রী সংগ্রহ ও বিতরণ করে। পাশাপাশি ওই প্রকল্পের মাধ্যমেও এসব সামগ্রী ক্রয় ও বিতরণ করা হচ্ছে। গত বছরের জুনে এই প্রকল্পের মাধ্যমে কেনা পিপিইর মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
গত বছর করোনা সংক্রমণের শুরুতে এসব সামগ্রী বিতরণের সময় এন-৯৫ মাস্কের নামে দেশে তৈরি নিম্নমানের মাস্ক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঘটনা তদন্ত করে সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। ওই ঘটনায় মামলা চলমান।
করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কেনাকাটা নিয়ে দুর্নীতির নানা অভিযোগ ওঠে। গত নভেম্বরে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছিল, জরুরি পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সরকারি ক্রয় বিধিমালা ২০০৮ লঙ্ঘন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অনেক ক্ষেত্রে মৌখিক আদেশে ক্রয় করা হয়েছে এবং কোনো ক্রয়ে ই-জিপি মাধ্যম ব্যবহার করা হয়নি।