প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে রাজধানীর অদূরবর্তি সাভারে ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ উঠেছে সাইদুর রহমান ওরফে শেখ সাইদের বিরুদ্ধে। ফ্ল্যাটের প্রকৃত মালিক মো. মনিরুল ইসলামকে সপরিবারে মারধরের অভিযোগও পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। এমন কী ভুয়া চুক্তিপত্র দাখিল করে ইতোমধ্যে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
তবে এখানেই খান্ত হননি সাইদুর, ফ্ল্যাটের মালিক মনিরুলকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ অবস্থায় প্রাণভয়ে সপরিবারে নিজের বাড়ি ছেড়ে দিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন মনিরুল ইসলাম। নিজের প্রাণ বাঁচাতে ও ফ্ল্যাট উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী।
বুধবার (২৩ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন মনিরুল ইসলাম ও তার পরিবার।
মনিরুল ইসলাম জানান, এক বছর আগে তিনি সাভারের গেন্ডা এলাকার ডি-৩৫/৫ নম্বর বাড়ির তৃতীয়, পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার ফ্ল্যাট কেনেন। ষষ্ঠ তলায় আগে থেকেই ভাড়া ছিলেন সাইদুর ওরফে শেখ সাইদের ভাগ্নে আল মামুন সরদার। পঞ্চম তলার কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় সেখানে কোনো ভাড়াটিয়া ছিল না। আর তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘চার মাস ভাড়া পাওয়ার পর মামুন সরদার ও তার মামা সাইদুর রহমান পঞ্চম ও ষষ্ঠতলার ফ্ল্যাটটি জবরদখল করেন নেন। এরপর ভুয়া চুক্তিপত্র দাখিল করে ও বিভিন্ন সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন। জালিয়াতির মাধ্যমে সাক্ষর নকল করে আমার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এরপরও ফ্ল্যাটটি না ছাড়ায় এবং আমাকে মারধর করাকে কেন্দ্র করে চলতি মাসের ১১ তারিখে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা (মামলা নং-৩২) দায়ের করি। পরে পুলিশ আল মামুনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।’
ভুক্তভোগী মনিরুল বলেন, ‘এরপর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে সাইদুর রহমান। গত ১৮ জুন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সন্ত্রাসী রাসেল, শাহিন, নাজমুলসহ আরও চার-পাঁচজনকে দিয়ে আমার এবং আমার স্ত্রীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে ওই দিন সন্ধায় থানায় ফের অভিযোগ দায়ের করি। গত দশ দিন অতিবাহিত হলেও থানা পুলিশের কোনো সহযোগিতা পাইনি, উল্টো প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রয়েছে।’
মনিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘কারাগারে থাকা আল মামুন সরদারের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের গডফাদার সাইদুর রহমান কিছু দিন আগেও ছিল ১০ হাজার টাকা বেতনের গার্মেন্টস কর্মী। হঠাৎ করে নাম পরিবর্তন করে হয়ে যায় শেখ সাইদ। পরিচয় দিতে থাকে প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়। শুরু করে ইয়াবা ব্যবসা, জমি ও ফ্ল্যাট দখলসহ চাঁদাবাজি। গড়ে তোলে সন্ত্রাসী বাহিনী। অল্প দিনের মধ্যেই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। সাইদুরের অবৈধ কর্মকাণ্ডের ভয়ে গেন্ডার কেউ মুখ খোলার সাহস করে না।’
তার দখল থেকে নিজের ফ্ল্যাট ফিরে পেতে ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মনিরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মনিরুলের ভাই তানজির খান রনি, প্রতিবেশি ও মনিরুলের বন্ধু মুকসেদ আলী প্রমুখ।