নিজস্ব প্রতিবেদক
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে যে নতুন অধ্যাদেশ এসেছে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ ও মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে তারা এ কাজটি করেছেন।
তবে একটা বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে অনুরোধ করব, ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও মামলার বিষয়ে যে জটিলতা, তা নিরসনের ব্যবস্থা যেন করা হয়। আইনের যেন অপব্যবহার না করা হয়, সেজন্য সরকারের কাছে আশা ও দাবি থাকল।
ধর্ষণের শিকার নারীর পক্ষে আইনি সহায়তা নিশ্চিৎ করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘কার্যকর উদ্যোগ’ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন সংসদের প্রধান বিরোধী দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
তিনি বলেন, আইনি জটিলতা দূর করে বিচার প্রাপ্তি সহজ করতে হবে। ধর্ষণ নির্মূল করতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই অপরাধীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
একের পর এক যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদ আর বিক্ষোভের মধ্যে ‘জরুরি’ বিবেচনায় আইনটি সংশোধন করে তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারির জন্য এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি তাতে সই করেন।
২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি এতদিন ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আর ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর মৃত্যু হলে বা দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
এ আইনে শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করার পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে বিচার ও রায় কার্যকর করার জন্য আইন সংশোধনের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করা হচ্ছিল বিভিন্ন সংগঠনের তরফ থেকে।
এ আইনের মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সাত দিন থেকে এক মাস এবং মামলা নিষ্পত্তির জন্য একশ আশি দিন (ছয় মাস) সময় বেঁধে দেওয়া থাকলেও বাস্তবে ওই সময়ের মধ্যে রায় দেওয়া সম্ভব হয় না।
তাছাড়া ধর্ষণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের এক একটি ঘটনা কিছু দিন পর পর সারা দেশকে নাড়া দিয়ে গেলেও এসব ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও শাস্তির নজির কম।
ধর্ষণের বেশিরভাগ মামলা বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় ধামাচাপা পড়ে যায়। তাছাড়া ঠিকমত ডাক্তারি পরীক্ষা না হওয়া, সামাজিক জড়তা, প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপসহ নানা কারণে বিচার পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।